সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে কয়লা কারখানা গুলোতে পুড়ানো হচ্ছে শাল-গজারি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস, মেহগনি ও বেলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির কাঠ কয়লা বানানোর কাজে ব্যবহৃত  হচ্ছে। অবৈধ ভাবে  কারখানা গুলো গড়ে উঠায় কালো ধোঁয়া পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ, পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণিদের নানা শ্রেনীর মানুষ অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও শাল-গজারিসহ সামাজিক বনায়ন উজাড় করে ফেলেছে একটি চক্র।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের পোড়া বাজার সংলগ্ন আমতলি এলাকায় রাস্তার সাথে ৩টি বড় মাটির চুলা দিয়ে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরী করছেন মিলন মিয়া । সে সরকারি রাস্তা দখল করে কাঠ গুলো রাস্তা উপরই রাখা হয়েছে। এসব কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে সামাজিক বন ঘেঁষে এবং ঘনবসতি এলাকায়।

কয়লা বানানোর মাটির তৈরি বড় আকারের চুলা। সংরক্ষিত ও সামাজিক বন থেকে আনা কাঠ ওই চুলায় দিন-রাত পুড়িয়ে কয়লা বানানো হচ্ছে। কারখানার আশপাশে বিশাল আকৃতির কাঠ স্তুপ করে রাখা হয়েছে। চার-পাঁচজন শ্রমিক দিন-রাত কাঠ চুলায় পোড়ানোর কাজ করছেন। দিনরাত ওইসব চুলা থেকে নির্গত ধোঁয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে এসব এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, গবাদি পশু-পাখিসহ ফসলও নানা রোগে আক্রান্ত ও ক্ষতিগস্ত হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত শাল-গজারি।

কারখানা থেকে ১০০ গজের মধ্যে আবদুল ফারুক হুসেনের বাড়ি তিনি বলেন, দিনরাত কারাখানার ধোঁয়া ও গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। পরিবারের প্রায় সকলেই কোন না কোন অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে কাশিতো আছেই। পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব কয়লা তৈরির কারখানায় অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।

অবৈধ থাকা সত্ত্বেও জনবসতি এলাকায় ও ফসলি জমি নষ্ট করে এসব চুল্লি স্থাপন করা হয়েছে। শক্ত কাঁচা লাল মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েকশ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। একটি চুল্লিতে সপ্তাহে কমপক্ষে ৩০০-৩৫০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়।

গোসিংগা বন বিট কর্মকর্তা বিপ্লব হুসেন বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল সহ বন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কোনো কারখানা গড়ে তোলা বেআইনী।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ইসমত আরা বলেন, খুব শিগগিরই ওইসব কয়লা কারখানা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

(এসকেডি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০)