আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হঠাত করেই উত্তাল হয়ে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে ছয়জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এক গ্রুপ বুধবার দুপুরে মানববন্ধন করেছেন।

ববি’র অস্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিদান, রাফি, ফারহান ও উচ্ছাসের ওপর হামলাকারীদের বহিস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুম্মান হোসেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, মেহেদী হাসান, জিহান মাহমুদ, ফাহিম হোসেন পিয়াস, জিহাদ রানা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র তাহমিদ জামান নাভিদ ও তার সহযোগি একই বিভাগের মোশারফ হোসেন, ইতিহাস বিভাগের ইয়াছিন হক ও বিধান সরকারসহ কতিপয় সন্ত্রাসীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমাদের চার সহপাঠীকে গুরুত্বর আহত করেছে। যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বক্তারা আরও বলেন, হামলায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র নাভিদের বাবার গাড়িতে করে আনা হয়েছে। এছাড়া নাভিদের বাবা সাবেক বিএনপি নেতা হামলার সময় ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় তার গাড়িসহ অবস্থান করছিলো। বক্তারা অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের বহিস্কারের মাধ্যমে ক্যাস্পাসকে সন্ত্রাসমুক্ত করার দাবি করেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

আহত রুম্মান হোসেন বলেন, মহানগর বিএনপি নেতার পুত্র তাহমিদ জামান নাভিদ দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নবীন শিক্ষার্থীরা তার সাথে রাজনীতি না করে আমাদের সাথে যোগ দেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত ছিলো। তাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথমে রাফি এবং পরে আমার ওপর হামলা চালায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদ জামান নাভিদ বলেন, রাফি প্রথমে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার বন্ধু হাফিজের ওপর হামলা চালায় এবং তাকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে আমরা হাফিজকে উদ্ধারের জন্য ক্যাম্পাসের সামনে আসার পরই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় উভয়ের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে।

অপরদিকে মঙ্গলবারের ওই হামলার পর রাতে অপর এক শিক্ষার্থীকে ববি’র শেরে বাংলা আবাসিক হলের একটি কক্ষে আটক করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা আগের হামলার ঘটনায় আহতদের সহযোগিরা করেছেন বলে দাবি করেছেন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী শাহজালাল। তিনি জানান, এ ঘটনায় হলের প্রভোষ্ট ও প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে ববি’র ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত জানান, বিষয়টি ছাত্রলীগের কোন বিষয় নয়, এটি সম্পূর্ণ সিনিয়র ও জুনিয়রদের দুটি ব্যাচের অভ্যন্তরীন কোন্দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস বলেন, এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্টরিয়াল বডির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় গোটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে জড়িতদের সনাক্ত করা হয়েছে। যার সবগুলো বিষয় উপাচার্যকে জানানো হয়েছে। বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মঙ্গলবার রাত থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০)