উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র বিজ্ঞান সমিতির উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণদানকালে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, জাতীয় পরিষদের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে অত্যন্ত বিপদজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হবে। ১২০ দিনের মধ্যে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ অবশ্যই শেষ করতে হবে বলে যে শর্ত রয়েছে তার জন্যই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠবে।

আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পার্টির এক বৈঠকে দলীয় খসড়া শাসনতন্ত্র বিবেচনার জন্য পেশ করা হয়। পার্লামেন্টারী পার্টির অনুমোদনের পর এই খসড়া শাসনতন্ত্র জাতীয় পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে দলের পক্ষ থেকে পেশ করা হবে। আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রায় চার ঘন্টাব্যাপী বৈঠকের পর পার্লামেন্টারী পার্টির ১৮৮টি ধারাবিশিষ্ট খসড়া শাসনতন্ত্র বিবেচনা ও পরীক্ষার জন্য একটি ৩০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। বৈঠক অপেক্ষমান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, খসড়া শাসনতন্ত্র পেশ করা ছাড়াও তাঁরা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

ভুট্টোর পিপলস পার্টি ও কাইয়ুম লীগ ছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য সমস্ত দলের এম.এন.এরা জাতীয় পরিষদের ৩ মার্চের ঢাকা বৈঠকে যোগদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কাউন্সিল মুসলিম লীগ,জমিয়তে ওলামায়ে পাকিস্তান তাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কাউয়ুম লীগের সেক্রেটারী জেনারেল খান এ সবুর জনান জেড. এ. ভুট্টোর প্রতি পূর্ব পাকিস্তানের ৭ কোটি লোকের রায় মেনে নিয়ে ঢাকা এবং ইসলামাবাদে দ্বৈত কেন্দ্র ভিত্তিক শাসনতন্ত্র প্রণয়নে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে জনসাধারণ যাতে তাদের নিজ ভূমিতে সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করতে পারে তার নিশ্চয়তা বিধানের আহ্বান জানান। খান এ সবুর বলেন পাকিস্তান একটি রাষ্ট্র কিন্তু দুই অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই বাস্তব সত্যটি মেনে নিয়ে কেবল বর্তমান রাজনৈতিক অচলবস্থা দূর করা সম্ভব।

পশ্চিম পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব গাউস বক্স বেজেঞ্জো এবং বেলুচিস্তান হতে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট ন্যাপ নেতা ড. আবদুল হাই বেলুচ ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আগমনের পর নিউমার্কেটে এক জনসভায় বক্তৃতাকালে বলেন, আগামী ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অবশ্যই হবে। জনাব বেজেঞ্জো পূর্ব বাংলার জনগণের সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বাংলার স্বায়ত্তশাসনের ন্যায় সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন দান করে বলেন, বেলুচ ও পাকতুন জনগণ ও স্বায়ত্তশাসন ও জাতিগত অধিকারের দাবিতে একইরূপে নির্যাতন ভোগ করে আসছে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০)