মাদারীপুর প্রতিনিধি : দেশে ফিরে বিয়ে করবে। আত্মীয়-স্বজনরা মেয়ে দেখাও শুরু করেছিলো। কারণ আগামী মাসেই তারা একসাথে দুই ভাই দেশে আসবে। এসেই দু’জন বিয়ে করে সুখের সংসার গড়বে। কিন্তু সে সবই স্বপ্ন হয়ে গেল মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার চাচাতো দুই ভাইয়ের।

বুধবার বিকেলে লিবিয়ায় মিসাইল হামলায় প্রাণ হারান তারা।

এখন তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বাবা-মায়ের শুধু একটাই দাবি, যে করেই হোক তাদের সন্তানদের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হোক। দেশের মাটিতেই তাদের কবর দিতে চান। এ জন্য তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

স্থানীয় ও নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুখের আশায় বাড়ির জায়গা বিক্রি করে দেড় বছর আগে দুই লাখ টাকায় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের সরোয়ার হোসেনের ছেলে মুরাদ হোসেন (২৫) ও একই বাড়ীর সম্পর্কে চাচাতো ভাই মো. আলী শেখের ছেলে মিলন শেখ (২১) পাড়ি জমায় লিবিয়ায়।

এরই মধ্যে তিন মাস আগে তাদের মামাতো ভাই গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের মশিউরকে(২৩) লিবিয়ায় নিয়ে যান তারা। বিদেশের মাটিতে ভালোই কাটছিল তিন ভাইয়ের দিন। একসাথে থাকা, খাওয়া ও কাজে যাওয়া। একসাথে বিয়েও করবে বলে পরিবারকে জানিয়েছিলো।

কিন্তু সম্প্রতি লিবিয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে বুধবার সকালে মিসাইল হামলায় স্যানেটারির দোকানে কর্মরত অবস্থায় প্রাণ হারান তিনজনই। এখন তাদের পরিবারের চলছে শোকের মাতম। আদরের ছেলেদের হারিয়ে পাগল প্রায় তাদের পরিবার। পরিবারের দাবি লাশ দেশে আনার।

একমাত্র ছেলে মুরাদকে হারিয়ে মা ফাতেমা বেগমের দিশেহারা। তিনি বলেন, নাড়িছেঁড়া আদরের দুলালকে দেশে এনে মাটি দিতে চাই। সরকার যেন আমার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব ব্যবস্থা করে দেন।

অপর নিহত মিলনের মা শাহিদা বেগম বলেন, ছেলের মুখটা একটু শেষবারের মতো দেখতে চাই। লিবিয়া থেকে মৃতদেহ আনার সামর্থ্য আমাদের নেই। সরকার যেন আমার ছেলেকে দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেন।

(এএসএ/অ/আগস্ট ০৮, ২০১৪)