আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে রবিবার ভোর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি আগুন পুড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে সরকারীভাবে ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা নিরুপনের কাজ চলছে। সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, জেলা প্রশাসক এস. এম অজিয়র রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দরা।

গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এলেও তাদের যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে আগুন নেভাতে ব্যর্থ হওয়ায় বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, বাবুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস, উজিপুর ফায়ার সার্ভিস ও মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের মোট ৬টি ইউনিটের কর্মীরা তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে আনেন। অগ্নিকান্ডের সময়ে ঢাকা থেকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলগামী শতাধিক গাড়ির হাজারো যাত্রীরা মহাসড়কে তিন ঘন্টা আটকা পরে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে সকালে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে মিজান সরদারের চায়ের দোকান থেকে রবিবার ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পরে। খবর পেয়ে গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে। তাদের রিজার্ভের পানি দিয়ে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। রিজার্ভের পানি শেষ হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে তারা আর আগুন নেভানোর কাজ করতে পারে নি।

এসময় স্থানীয় ব্যবসায়িরা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বিরেুদ্ধে কাজের গাফিলাতির কারনে বিক্ষোভ করে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। বন্ধ হয়ে যায় সকল যানবাহন চলাচল। ইতোমধ্যেই বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট, বাবুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস, উজিপুর ফায়ার সার্ভিস ও মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসসহ মোট ছয়টি ইউনিটের কর্মীরা তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাড়ে চয়টার দিকে আগুন সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আনেন। ততক্ষনে অন্তত ৫০টি দোকান সম্পূর্ন ভস্মিভুহ হয়ে যায়।

গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের সহকারি স্টেশন অফিসার মোঃ আঃ সালাম জানান, আগুনে পুড়ে ১ কোটি টাকার সম্পদ সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ১০ কোটি টাকার মালামাল। আগুন লাগার খবর পাবার সাথে সাথে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাদের বিরুদ্ধে গাফিলাতির অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। তবে, পানি দেয়ার যান্ত্রিক ত্রুটির কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন তিনি।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন জানান, রবিবার ভোর রাতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের একটি চায়ের দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাড়ে তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে ২৫ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন ভষ্মিভূত ও ১৪ টি দোকানের আংশিক ক্ষতি হয়। তিনি আরও জানান, অগ্নিকান্ডে ব্যবসায়ীদের অন্তত দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(টিবি/এসপি/মার্চ ০২, ২০২০)