আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পূর্বের এবং বর্তমান কর্মস্থলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি নিজ ও স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমান হাওলাদার বর্তমানে বরিশাল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক পদে থাকলেও দুই বছর ধরে তিনি বিভাগীয় দায়িত্ব অতিরিক্ত হিসেবে পালন করছেন। এছাড়া ৭/৮টি উপজেলা কার্যালয়ের অর্থনৈতিক দায়িত্বে রয়েছেন। দাপ্তরিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে ওইসব কার্যালয়ে কর্মরতদের অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে তিনি মাসোহারা বাবদ দুই বছরে কমপক্ষে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

সূত্রমতে, মিজানুর রহমান হাওলাদার যশোর জেলা কার্যালয়ে উপ-পরিচালক থাকাকালীন সময় আদম শুমারী প্রকল্প, অর্থনৈতিক শুমারী প্রকল্প, এনএইচডি প্রকল্প থেকে প্রচুর অর্থ সরকারী কোষাগার থেকে হাতিয়ে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব কারণে তাকে যশোর থেকে বরিশাল জেলায় বদলি করার পর যশোরে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

বরিশাল জেলায় বদলীর পর তিনি বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকালে বরিশাল জেলা, ঝালকাঠী জেলা, বরগুনা জেলাসহ অন্যান্য জেলার কতিপয় পরিসংখ্যান অফিসারদের সহায়তায় বিপুল অংকের সরকারী বরাদ্দের অর্থ লুটপাট করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়। তদন্তে পটুয়াখালী জেলার বর্তমান উপ-পরিচালক আতিকুর রহমানের সহযোগিতাসহ অজ্ঞাত কারনে সে পার পেয়ে যান।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, মিজানুর রহমান হাওলাদার বরিশাল বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সময় তার দুর্নীতির সহযোগি কয়েকজন উপ-পরিচালক ও স্টাফদের সহায়তায় আনুমানিক ৮৪ লাখ টাকার সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন। সেই টাকা তিনি জমি এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন। তার আল আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকে একাধিক একাউন্টে ডিপিএস, এফডিআর, ফিক্সড ডিপোজিট ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এছাড়া তিনি হজ্বে লোক পাঠানোর ট্র্যাভেলস ব্যবসায়ও অর্থ ব্যয় করেছেন।

দুদক চেয়ারম্যানের কাছে প্রেরিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মিজানুর রহমানের সহধর্মিনী ফারজানা বেগমের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল অর্থ সংরক্ষিত রয়েছে। তাদের নামে-বেনামে বরিশাল শহরের বিভিন্নস্থানে একাধিক প্লট রয়েছে। এসবের দেখভাল করেন মিজানুর রহমানের শ্বশুর।

দুদক চেয়ারম্যানের কাছে প্রেরিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।

(টিবি/এসপি/মার্চ ০৪, ২০২০)