স্টাফ রিপোর্টার : এই মুহূর্তে যে সকল কুয়েতপ্রবাসী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের জন্য করোনামুক্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য নয় বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, যে সকল দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে তাদের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রযোজ্য হতে পারে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। এ সময় তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী কুয়েতপ্রবাসী যাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ নেই, আক্রান্ত কোনো রোগীর সংস্পর্শে আসেননি-এমন রোগীকে তাহলে কী (ধরনের) মেডিকেল সার্টিফিকেট দেয়া হবে?

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি সংক্রান্ত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইইডিসিআর পরিচালক।

করোনা সংক্রান্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান করা আইইডিসিআরের দায়িত্ব নয় বলে মন্তব্য করে আইইডিসিআরে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আইইডিসিআরের দায়িত্ব করোনা শনাক্ত করা, করোনা সার্ভিলেন্স করা এবং করোনা হলে তাকে কোয়ারেন্টাইন করা। যার মধ্যে করোনা নেই আমরা নিশ্চিত জানি, তাকে পরীক্ষা করা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এদেশে কোনো করোনা রোগী নেই যার মাধ্যমে কেউ সংক্রমিত হতে পারে।

তবে যেসব দেশে করোনার অনেক রোগী স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রযোজ্য হতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বাংলাদেশসহ ১০ দেশের নাগরিকদের কুয়েত প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সরকার। এই ১০ দেশের নাগরিকরা কুয়েত দূতাবাসের দেয়া সনদ দেখাতে পারলে কেবল তাদের সে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে। সেই সনদে লেখা থাকবে ‘ওই যাত্রী করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত’।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ৮ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রভাবশালী দৈনিক গালফ নিউজ।

বুধবার (৪ মার্চ) কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, এ স্বাস্থ্য সনদ অবশ্যই কুয়েত দূতাবাস থেকে অনুমোদিত হতে হবে। উল্লেখিত দেশের মধ্যে যেসব দেশে কুয়েতের দূতাবাস নেই, সেসব দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যায়িত সনদ থাকতে হবে। অন্যথায় নাগরিককে ফেরত পাঠানো হবে।

কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল আরও জানায়, নির্দেশ অমান্য করা কোনো নাগরিককে ফেরত পাঠাতে অর্থ গুনবে না কুয়েত সরকার। নিজ খরচে তাকে ফিরে যেতে হবে। পাশাপাশি নির্দেশ অমান্য করার কারণে বহনকারী বিমান সংস্থাকে জরিমানা করা হবে।

মধ্যপ্রাচের দেশগুলোর মধ্যে ইরানের পর কুয়েতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৫, ২০২০)