স্পোর্টস ডেস্ক : দর্শনীয় এক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে গ্যালারি মাতালেন লিটন দাস। কয়েক ওভার পরেই তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এলো ইনসাইড আউট শটে লং অফ বাউন্ডারি দিয়ে বিশাল এক ছক্কার মার। দুই ডানহাতি-বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বাহারি শটের ফুলঝুরিতে তখন মাতোয়ারা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারি।

অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বের শেষ ম্যাচ হওয়ায় আগের দুই ম্যাচের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই দর্শক উপস্থিতি ছিলো তুলনামূলক অনেক বেশি। যেহেতু আগে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ, তাই মাশরাফি বোলিং করবেন ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে। এর আগে মাঠে উপস্থিত দর্শকদের চাঙা রাখার দায়িত্বটা নিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তামিম ইকবাল।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে একটি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন লিটন ও তামিম। প্রথম ম্যাচে লিটন খেলেন ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস, পরেরটায় তামিমের ব্যাট থেকে আসে রেকর্ডগড়া ১৫৮ রানের মারকুটে ইনিংস। কিন্তু দুজনের যুগলবন্দী হচ্ছিল না সেভাবে। আজ (শুক্রবার) বিশেষ ম্যাচেই দুই ওপেনার একসঙ্গে মিলে দলকে এনে দিলেন উড়ন্ত সূচনা, গড়লেন রেকর্ড জুটি।

বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ইনিংসের ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বন্ধ হয়ে গেছে খেলা। তার আগেই অবশ্য দেশের ইতিহাসের উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন তামিম ও লিটন। ভেঙে দিয়েছেন ২১ বছরের পুরনো এক রেকর্ড। খেলা থামার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩.২ ওভারে বিনা উইকেটে ১৮২ রান। যা কি না দেশের ওয়ানডে ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড।

১৯৯৯ সালের মার্চে মেরিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ১৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ এবং মেহরাব হোসেন অপি। সে ম্যাচেই বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি। আজ প্রায় ২১ বছর পর আরেক মার্চে এসে, একই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে জুটির রেকর্ড ভেঙে দিলেন তামিম ও লিটন।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে পঞ্চমবারের মতো ১৫০+ রানের উদ্বোধনী জুটির নজির এটির। যার মধ্যে তিনটিতেই ইনিংসের সূচনা করেছেন তামিম। এবারই প্রথমবারের মতো দেড়শ রানের উদ্বোধনী জুটির সাক্ষী হলেন লিটন। তবে এর আগে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ১৮৯ রানের জুটি গড়েছিলেন লিটন।

বৃষ্টিতে খেলা থামার আগে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন লিটন দাস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে চতুর্থবারের মতো কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে দুইটি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন লিটন। এর আগে তামিম ইকবাল দুইবার (পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১৮) এবং ইমরুল কায়েস জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৮ সালে একই সিরিজে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন।

তামিম ইকবালও অপেক্ষায় রয়েছেন তার ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির। এখনও পর্যন্ত তার সংগ্রহ ৮৪ বলে ৭৯ রান। আর মাত্র ২১ রান হলেই তৃতীয়বারের মতো এক সিরিজে জোড়া সেঞ্চুরি হয়ে যাবে তার। আর জুটিতে মাত্র ১৮ রান যোগ হলেই প্রথমবারের মতো উদ্বোধনী জুটিতে ২০০ রানের নজির গড়বে বাংলাদেশ।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২০)