স্টাফ রিপোর্টার : স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থি ও বিএনপিপন্থি সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

শনিবার এ দুই সংগঠন থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। এ সময় সরকারপন্থিরা বেশ কিছু ধারায় উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি কয়েকটি ধারাকে অপ্রয়োজনীয় হিসাবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি এই নীতিমালাকে ভবিষ্যত নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা হিসাবে আখ্যা দিয়ে কমিশন গঠনেরও দাবি জানান।

অন্যদিকে, বিএনপি পন্থীরা এই নীতিমালা বাতিল করে সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল স্বাধীন কমিশনের নতুন নীতিমালা প্রণয়নের দাবি করেছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বিএফইউজে’র সরকারপন্থি অংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল লিখিত বক্তব্যে তিন দফা আহ্বান জানান।

এগুলো হচ্ছে, স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা, সময় বেঁধে দিয়ে সেই কমিশনকে নীতিমালা করতে বলা এবং কমিশন গঠনের আগে নীতিমালার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা।

তিনি বলেন, এই নীতিমালায় কমিশন গঠনের কথা বলে আবার তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অধ্যায়কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এগুলো গাইডিং প্রিন্সিপাল হিসাবে থাকতে পারে।

“নীতিমালায় ভুল তথ্য না দেয়া, মুক্তিযুদ্ধে চেতনা সমুন্নত রাখা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ইত্যাদি সমুন্নত রাখার কথা বলা হয়েছে। এগুলোর কোনো প্রয়োজন ছিলো না। সংবিধান ও প্রচলিত আইনেই এগুলোর বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।”

“বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে এমন বক্তব্য প্রচার করা যাবে না বলে নীতিমালা বলা হয়েছে। এটা তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে সেটা অবশ্যই প্রকাশ করবে সম্প্রচার মাধ্যম।

“কমিশন গঠনের আগ পর্যন্ত সিদ্ধান্তের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়কে। এটা আমাদের সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়।

“কমিশনে কে থাকবে সেটাও এখানে বলা হয়নি। আমরা কোনো আমলাকে নিশ্চয়ই এখানে দেখতে চাই না। আমরা চাই, প্রবীণ কোনো সম্পাদক, অভিজ্ঞ সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষক তথা সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকেই নিয়ে এই কমিশন গঠন করতে হবে।

খসড়া প্রণয়ন কমিটির এই সদস্য বলেন, “খসড়ায় আমি আমার মতামত দিয়েছি। আমার প্রস্তাবনার যেগুলো গ্রহণ করা হবে না, সেগুলো আমার মত হিসাবে ফুটনোটে রাখতে বলেছিলাম। রাখা হয়েছে কি-না, আমি জানি না।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বিএফইউজের’র মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া।

সংবাদ সম্মেলন চলার সময়ই বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপিপন্থি অংশ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে।

সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপিপন্থি অংশের সভাপতি আব্দুল হাই শিকদার নীতিমালা বাতিলের দাবি জানান।

তিনি সরকারপন্থি সাংবাদিকদের দাবিকে স্ববিরোধী আখ্যা দিয়ে এই নীতিমালা বাতিলের দাবিতে তাদেরকেও রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।

বিএফইউজে’র এই অংশের মহাসচিব এমএ আজিজ বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতি ছিলো, বিটিভিকে স্বায়ত্ত্বশাসন দেয়া হবে। সেটা না করে তারা এমন একটি নীতিমালা করেছে, যেটা বাস্তবায়ন হলে সব বেসরকারি টেলিভিশন বিটিভিতে পরিণত হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, কমিশনের মাধ্যমেও এই সরকারের আমলে নীতিমালা হতে পারে না। কারণ এই সরকারের আমলে কমিশন হলে সেটাও আওয়ামী লীগের কমিশনই হবে।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০৯, ২০১৪)