স্টাফ রিপোর্টার : ভোক্তা অধিদফতরের অভিযানের পর রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। শনিবার কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে করোনাভাইরাস আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা দু’দিনের ব্যবধানে শুক্রবার পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ করে ফেলেন। ৪০ টাকা কেজির পেঁয়াজ এক লাফে ৭৫-৮০ টাকা হয়ে যায়।

এ প্রেক্ষিতে কারওয়ানবাজারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অভিযানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। অধিদফতরের এই অভিযানের পর শনিবার সকালেই পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে যায়।

তবে বাজার ও ব্যবসায়ী ভেদে পেঁয়াজের দাম ভিন্ন ভিন্ন রাখা হচ্ছে। এমনকি একই বাজারে একই মানের পেঁয়াজ এক এক ব্যবসায়ী এক এক রকম দাম রাখছেন। অবশ্য সব ব্যবসায়ীই গতকাল থেকে আজ কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

হাজীপাড়া বৌ-বাজারে মিরাজ নামের এক ব্যবসায়ীকে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। এই ব্যবসায়ী বলেন, গতকাল এই পেঁয়াজের কেজি ৭৫ টাকা বিক্রি করেছি। আজ ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। আড়ত থেকে কম দামে আনতে পারার কারণে দাম কম রাখছি।

এই ব্যবসায়ীদের থেকে কিছুটা দূরে পেঁয়াজ বিক্রি করা আরিফুল হোসেন বলেন, গতকাল আমরা ৮০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আজ ৬০ টাকা বিক্রি করছি। ভোক্তা অধিদফতরের অভিযানের পর আড়তে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে আমাদের পেঁয়াজ আগে কেনা তাই ৬০ টাকার নিচে বিক্রি করতে পারছি না।

রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ৫৫ টাকা, কেউ ৬০ টাকা আবার কেউ ৬৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। ৬০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা শরিফুল বলেন, গতকাল ৮০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। তারপরও পাঁচ বস্তা পেঁয়াজ দেখতে দেখতে বিক্রি হয়ে গেছে। আজ ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তবে গতকালের মতো বিক্রি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনে রেখেছে। এ কারণে হয়তো আজ পেঁয়াজের চাহিদা কম। আবার কারওয়ানবাজারে ভোক্তা অধিদফতর অভিযান চালিয়েছে, ফলে ওখানেও পেঁয়াজের দাম কমেছে। আমাদের ধারণা মানুষ যদি আবার হুমড়ি খেয়ে পেঁয়াজ কিনতে না পড়ে যায়, তাহলে দাম আরও কমবে।

পেঁয়াজের দাম কমলেও গতকালের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন, আদা ও আলু। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি, যা গত বুধবার ছিল ৭০-৮০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা বুধবার ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আদার দাম বেড়ে হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকা। আর ১৮-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-২৮ টাকা।

এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম অনেকটাই স্থিতিশীল রয়েছে। গতকালের মতো করলা ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৫০-৬০ টাকা, শশা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, গাজর ৩০-৩৫ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মাঝারি আকারের লাউ আগের মত বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) আগের মতোই ১৫-২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মিলন বলেন, ঢাকার সবজির গাড়ি আগের মতোই আসছে। ফলে সবজির সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া সবজি মজুত করেও রাখা যায় না। যে কারণে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সবজির পরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া সবজির দাম বাড়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২১, ২০২০)