সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা থেকে পানপট্টি যাওয়ার পথে মুরাদনগর গ্রামের রাস্তার দুই পাশ জুড়ে দেখা মিলে আলু চাষিদের ব্যাস্ততা। কেউবা ক্ষেত থেকে তুলছেন। আবার কেউ তা মাথায় নিয়ে এক জায়গায় জড়ো করছেন। সবার মুখেই খুশীর ঝিলিক।

উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে গড়ানুপাতে আলুর উৎপাদন ভাল হলেও মুরাদনগরে বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে সাধারন মানুষের কাছে মুরাদনগর গ্রামটি আলুর গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

গলাচিপা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বছরে গলাচিপায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে। গলাচিপায় ১ হাজার হেক্টর গোল আলুর আবাদ হয়েছে। তবে গলাচিপার মুরাদনগর গ্রামে আলুর উৎপাদন হয়েছে বেশি।

চাষিরা জানান, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঢাকার মুন্সিগঞ্জের পরে গলাচিপা উপজেলা আলু চাষে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতে পারবে। গলাচিপা উপজেলার মুরাদনগর গ্রামের আলু চাষী মোস্তফা খান জানান, চলতি বছরে তিনি ৩৫ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। বীজ বপনের ৬০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু করেছেন।

স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ, অনুকুল আবহাওয়া এবং আলু উৎপাদনে মাটি উপযোগী হওয়ায় উৎপাদন ভাল হয়েছে। যদি ৯০ দিন পরে ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন করা যেত, তাহলে এর দাম দেড় গুন বেশি পাওয়া যেত। চাষি শামসুল হুদা জানান, এ বছর বিএডিসির সহযোগীতায় মাত্র ৩৫ শতাংশ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। তার উৎপাদন খরচ হয়েছে বাইশ হাজার টাকা। আর বিক্রি করেছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

উৎপাদিত আলু থেকে তার লাভ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। আলুর চাষ পদ্ধতি নিয়ে কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ডিসেম্বর থেকে আবাদ শুরু হয় এবং ফেব্রুয়ারীর শেষ অথবা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ক্ষেত থেকে আলু তোলা শুরু করেন। প্রথমে ক্ষেত চাষ করে আগাছা বাছাই করে বীচ রোপনের উপযোগী করে তুলতে হয়। আলু এবং গাছের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় ধ্বংস করতে কিটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এরপরে মাটি থেকে আর একবার আগাছা উপরে ফেলে আলুর বীজ রোপন করতে হয়। সঠিক পরির্চযা, সময়মত পানি দিতে পারলে এবং গাছে কোন ধরনের পোকার আক্রমন না হলে, অল্প খরচে অধিক লাভ করা যায়।

তিনি আরো বলেন, আলু সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চাষীদের প্রতি সরকার এবং কৃষি বিভাগ সহনশীল হলে অনেক বেশি কৃষক আলু চাষে উৎসাহিত হবে। পেত উৎপাদিত আলুর নায্য মুল্য।

গলাচিপা কৃষি অফিসার এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বছরে উপজেলায় আলুর বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। তবে উপজেলার মুরাদনগর গ্রামে আলুর বেশি উৎপাদন হয়েছে।

(এসডি/এসপি/মার্চ ২১, ২০২০)