সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে এ পর্যন্ত নিজ বাড়িতে ফেরত এসেছেন ১শ ২৩ জন। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এদের প্রত্যেককেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিলেও তা অনেকেই মানছেন না। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন মাত্র ২৮ জন।

সরকারের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে একটি সতর্কতামূক চিঠি আনসার ভিডিপির সদস্যরা বিদেশ ফেরতদের চিহ্নিত করতে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌছে দিচ্ছেন চিঠি এবং টানিয়ে দিচ্ছেন লাল পতাকা।

উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা প্রবীর গাঙ্গুলী বুধবার জানান, এ পর্যন্ত ১শ ২৩ জন বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে নিজ বাড়িতে এসেছেন। তার দাবী এদের ৬৭ জন ইতিমধ্যে ১৪ দিন নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইন পার করেছেন। ৫৬ জন এখনও বাকি আছে। এদের চিহ্নিত করতে ইউনিয়ন আনসার কমান্ডারের নেতৃত্বে বাড়ি বাড়ি গিয়ে উড়ানো হচ্ছে লাল পতাকা।

একটি সূত্রে জানা যায় মঙ্গলবার আনসার ভিডিপির কমান্ডার লালচু মিয়া সদস্যদের নিয়ে কেন্দুয়া উপজেলার দলপা ইউনিয়নের আমতলি গ্রামের সিংগাপুর ফেরত শওকত আলমের বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে দেয়। কিন্তু শওকত আলম কয়েকদিন আগে সিংগাপুর থেকে আসলেও তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে রামপুর বাজারে অবস্থান করে ঘুরাফেরা করছেন।

কেন্দুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান জানান, ইতিমধ্যে যারা বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন তাদের প্রত্যেককেই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং জন প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচারনা চালানো হচ্ছে। তাছাড়া পুলিশের সদস্যদের মাধ্যমে বিদেশ ফেরতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ই-মেইলে ১১২ জন বিদেশ থেকে কেন্দুয়ায় ফেরত এসেছেন বলে তথ্য তার কাছে এসছে। তাছাড়া ১১২ জনের মধ্যে ২৮ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে এ তথ্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করে তার কার্যালয়ে তথ্য দিয়েছে।

পুলিশ ও আনসার ভিডিপির তথ্যের মধ্যে গড়মিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তথ্য আসছে তাই এটি কমবেশি হতে পারে।

আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইন অমান্য করায় ইতিমধ্যে গড়াডোবা ইউনিয়নের চিকনি গ্রামের সিংগাপুর ফেরত মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এখন যদি কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন অমান্য করেন, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও ৬ মাসের দন্ড দেয়ার বিধান করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে সারা দিন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে বিভিন্ন হাটবাজারে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

(এসবি/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২০)