আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্ট আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চের ওই হামলায় ৫১ জন মুসল্লি নিহত হন। তার বিরুদ্ধে ৫১ জনকে হত্যা, আরও ৪০ জনকে হত্যাচেষ্টা এবং একটি সন্ত্রাসবাদে অভিযোগ ছিল। সবগুলোই তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বর্তমানে লকডাউন অবস্থায় রয়েছে নিউজিল্যান্ড। আজ বৃহস্পতিবার খুব কম সংখ্যক আদালতের লোকজনের উপস্থিতিতে ক্রাইস্টচার্চের আদালতে ব্রেন্টন তার দোষ স্বীকার করেন। এর আগে বরাবরই এ হামলার ঘটনায় তার দোষ অস্বীকার করে আসছিলেন এই হামলাকারী।

আদালতে সাধারণ কোনো জনতাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং হামলাকারী ব্রেন্টন ও তার আইনজীবীরা ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে এ শুনানিতে অংশ নেন।

তবে আদালতে দুই মসজিদে হামলায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে একজন উপস্থিত ছিলেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে।

বিচারক ম্যান্ডার আদালতে বলে, ‘এটা দুঃখজনক যে, কোভিড-১৯-এর বাধার কারণে ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।’

বিবিসি জানিয়েছে, ব্রেন্টনের বিরুদ্ধে আনীত ৯২টি অভিযোগের শাস্তি খুব শিগগিরই শোনানো হবে। এর আগে আগামী ১ মে পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হবে তাকে।

আল নূর মসজিদে (মসজিদ আন-নূর) হামলায় স্ত্রী হুসনাকে হারান ফরিদ আহমেদ। আসামির দোষ স্বীকারের এক প্রতিক্রিয়ায় টেলিভিশন নিউজিল্যান্ডকে বলেন, ‘এ ঘটনায় অনেকে হয়তো স্বস্তি পাবেন। তবে অনেকের মনে বেদনাই থেকে যাবে ওই দিনের হামলায় তাদের প্রিয়জনদের হারানোর স্মৃতিকে নিয়ে।’

হামলাকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এতদিন তার জন্য প্রার্থনা করে এসেছি এবং সে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আমি এই ভেবে সন্তুষ্ট যে, সে অবশেষে দোষ স্বীকার করেছে এবং এটা একটা ভালো সূচনা।’

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ফেসবুকে লাইভ দিয়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা চালান ব্রেন্টন ট্যারান্ট। জুমার নামাজ চলাকালে মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত এই হামলা চালান তিনি। ভিডিও গেমসের ন্যায় একের পর এক মুসল্লিকে গুলি করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন ব্রেন্টন। এ হামলায় ৫১ জন প্রাণ হারান।

সারাবিশ্বকে গভীরভাবে নাড়া দেয় এই হামলা। এ ঘটনায় বন্দুক আইন শিথিল করতে বাধ্য হয় নিউজিল্যান্ড।

(ওএস/পিএস/মার্চ ২৬, ২০২০)