সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারী ভাবে প্রজ্ঞাপন জারির পর গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বিভিন্ন এনজিও‘র গ্রহিতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেখানে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

মানুষের আয়, ব্যবসা- বানিজ্য, কাজক্রমে ঘটেছে ছন্দপতন। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক আয়- উপার্জন কমে গেছে। কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে থেমে নেই কাপাসিয়া উপজেলায় এনজিও কর্মীদের কিস্তির টাকা আদায় কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে এনজিও কর্মীরা তাদের কিস্তির টাকা আদায় করতে ঋণ গ্রহিতার বাড়িতে বাড়িতে এসে বসে থাকেন। কিন্তু এ দুঃসময়ে তারা কিস্তির টাকা দিতে পারছে না। এ নিয়ে হতাশা ও দুশ্চিতায় পড়েছে অনেকে কাপাসিয়া উপজেলা তরগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন, পেওরাইট গ্রামের অটোরিকশা চালক মনির হোসেন, মাতাব, রাজমিস্ত্রী শ্রমিক রুহুল আমিন, ব্যবসায়ী ইকরাম সহ আরো অনেকে।

সরজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় তেমন কোন লোক জন নেই । মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না । কাপাসিয়া বাজার এলাকার জনৈক রিক্সা চালক বলেন, প্রায় এক ঘন্টা রিক্সা নিয়ে দাঁড়িয়েছি আছি এখনো একটি ভাড়া ও পাইনি। লোকজন ঘর থেকে বের না হওয়ার কারণে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। কি ভাবে খাবো? কি ভাবে কিস্তি চালাবো? বড় চিন্তায় আছি ভাই। স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হেকিম বলেন, এই সংকটময় সময়ে ঋণের কিস্তি উত্তোলন স্থগিত করা ছাড়া উপায় নেই। এনজিও’র ঋণ শ্রেণিকরণ আগামী জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনার কারণে বিশ্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতির এ নেতিবাচক প্রভাবের ফলে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ গ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির পরিচালক মোহাম্মাদ ইয়াকুব হোসেন স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় জারির পরও উপজেলার কোন এনজিও এই নির্দেশনা মানছেনা ।

পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি, সেবা, দিশা, পদক্ষেপ, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, বীজ,বাসা,শক্তি ফাউন্ডেশন, বুরো বাংলাদেশ সহ প্রায় ২০ এনজিও কাপাসিয়া উপজেলায় ঋণ কার্যক্রম সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে ।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ইসমত আরা এ বিষয়ে জানান, আগামী জুন পর্যন্ত গ্রাহকদের কিস্তির টাকা পরিশোধে জন্য কোন চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড, মোঃ আমানত হোসেন খান বলেন, এ বছর জুন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ঋণের কিস্তি বিষয়ে কোন চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন এনজিওদের ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখার বিষয়ে চিঠি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি জানান।

(এসকেডি/এসপি/মার্চ ২৮, ২০২০)