সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : রিকশা চালক সাবুল মিয়া। বয়স ৫৯ বছর। বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার ১১ নং চিরাং ইউনিয়নের ধোপাগাতী গ্রামে। সারাদিন রিকসা চালিয়েই সুখে সংসার চলত তার। স্ত্রী সন্তান নিয়ে ৫ জনের সংসার এখন চলছে খুব দুঃখে কষ্টে। প্রাণগাতি করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারের অঘোষিত লকডাউনের ফলে রিকসার যাত্রী নেই বললেই চলে। আগে যেখানে সারা দিন ৪শ থেকে ৫শ টাকা রোজগার করতেন। সেখানে বর্তমানে তিনি খুব বেশি হলে ৮০ থেকে ৯০ কিংবা কোনদিন ১শ টাকাও রোজগার করতে পারেন। রোজগার কমে যাওয়ায় স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে সংসার চালাতে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারনে ঘরে থাকার পরামর্শ থাকলেও জীবন বাঁচানোর তাগিতে তিনি রিকসা নিয়ে রোজগার করতে বের হয়েছে রাস্তায়।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় সাবুল মিয়াকে পাওয়া যায় উপজেলা পরিষদের সামনে। যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় বসে আছেন তিনি। তিনি বলেন, “করোনার ভয় তো আছেই, কিন্তু থাকলে কি অইব, ভাত খাইয়াতো জীবন বাঁচাইতে অইব। আমি রিকসা লইয়া না বাইরইলে, বউ ফোলাফান লইয়া উবাস থাহন লাগব।” সরকারি কোন সাহায্য পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনার পর আডানা সাহায্যও পাইছিনা। যদি খাওন পাইতাম, চাউল ডাইল পাইতাম তাওইলে রিকসা লইয়া ঘর থাইক্যা বাইরইতামনা।

সাবুল মিয়ার মত অনেক রিকসা অটো শ্রমিক ঠিকমত রোজগার করতে স্ত্রী সন্তান ও সংসার নিয়ে খুব কষ্টে আছেন। তাদের সঠিক তালিকা তৈরি করে ঘরে ঘরে খাদ্য দ্রব্য পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকলেও সেই নির্দেশনা এখনও কেন্দুয়ায় কার্যকর হচ্ছেনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দকৃত প্রতি ইউনিয়নে ১ মেট্রিকটন চাল ১০ কেজি করে ১শ জন নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সব ইউনিয়নে এখনও তালিকা প্রস্তুত হয়নি। তালিকায় এসব শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের নাম অন্তভূক্তির দাবী সমাজের সচেতন মহলের।

(এসবি/এসপি/মার্চ ৩১, ২০২০)