মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে সকাল-বিকেল নিয়মিত বসছে দৈনিক বাজার। পাশাপাশি নির্ধারিত স্থান ও বন্দরে বসছে সাপ্তাহিক হাট। ফলে বহু লোক সমাগমের কারণে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই যাচ্ছে। 

এদিকে খোজ নিয়ে জানা যায়, শহরতলি ও গ্রামগঞ্জের কেউ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করছে না। লম্বা ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামে আসা লোকজন দল বেধে যাতায়াতসহ চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। এসব অসচেতন লোকজনকে সচেতন করতে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও অন্য সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী হিমশিম খাচ্ছে। জেলা প্রশাসকের গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও তা মানছে না কেউ। ঢাকা ফেরতরা বেশি বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করছে। যাতায়াত করছে হাট-বাজারসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, নানা বয়সের মানুষ করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে অবাধে হাট-বাজার করছে। বুধবার সকালে হাট বসার কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর রাজৈরের টেকেরহাট উত্তরপাড়ে সৃষ্টি হয় যানজট। লোক গাদাগাদি করে চলাচল করছে ইজিবাইক, ভ্যান রিকসাসহ ছোট-ছোট যানবাহন।

এমন দৃশ্য সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে মাদারীপুর সদর ও রাজৈর উপজেলার প্রায় সর্বত্র। তবে শিবচরের চিত্র ভিন্ন। সেখানে লোক সমাগম খুব একটা দেখা যায় না।

বুধবার শহরের ইটেরপুল, পুরান বাজার, কুলপদ্বী, চৌরাস্তা, মস্তফাপুর, মঠের বাজার, ছিলারচরসহ বিভিন্ন স্থানের হাট-বাজারে লোক সমাগম লেগেই থাকতে দেখা যায়।

এ ছাড়া রাজৈর উপজেলার রাজৈর, টেকেরহাট বন্দর, শংকরদী উত্তরপাড়, দক্ষিণপাড়, বন্দর হাট, আমগ্রামসহ গ্রামের হাট-বাজারে সামাজিক দুরত্ব মোটেই তোয়াক্কা করছে না কেউ। দৈনিক বাজার ও সাপ্তাহিক হাটের দিন থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল রাজৈর ও টেকেরহাট বাজারে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে বহু মানুষ ভিড় করছে।
শহরতলি ও গ্রামগুলোতে গোপণে বা প্রকাশ্যে চলছে চায়ের দোকানে আড্ডা, খাবারের হোটেলে ভীর। করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি জেনেও অনেকে বিরূপ মন্তব্য করে বসে গ্রামের মানুষ।

এছাড়াও গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও ইঞ্জিনচালিত ভ্যান, ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রা চলছে স্বাভাবিকভাবেই। রাজৈরের টেকেরহাট বন্দরে বিশেষ করে মহাজনপট্টিতে সব দোকানপাট চলছে আগের মতই। বুধবার সকালে টেকেরহাট উত্তরপাড়ে রবি শস্যের হাটে শতশত ক্রেতা-বিক্রেতা ও রবিশস্য বোঝাই যানবাহনে রীতিমতো যানজটের সৃষ্টি হয়। এই যানজটে ঘন্টাখানের আটকে থাকে জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক। প্রতিনিয়ত এ ধরণের হাট-বাজারে বহু লোক সমাগমের কারণে সামাজিকভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। টেকেরহাট কাঁচা বাজারে নারীদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষনীয়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ার আইন মানছে না কেউ।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে। কিন্তু যারা সচেতন হচ্ছে না তাদের জন্য আইনের প্রয়োগ আরও বাড়িয়ে দেয়া হবে। জরিমানার হার বাড়াতে হবে। আর আমরা সেটা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আইনের মধ্য থেকেই আইন ভঙ্গকারীকে জরিমানা ২ হাজার টাকার স্থানে ৫ হাজার টাকা করবো। আমরা আইন প্রয়োগ করছি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, সকলের চেষ্টা করে যাচ্ছে সম্মিলিত সহযোগিতায় করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি থেকে মাদারীপুরকে রক্ষা করতে। সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতায় আমরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারব।

(এএস/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২০)