আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বৃহত্তর বরিশাল বিভাগের বাউফলে করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে চলছে চাঁদাবাজি। আর এ চাঁদাবাজদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন কনকদিয়া ইউনিয়নের প্রাইমারী স্কুল, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীসহ ব্যবসায়ীরা। পাচঁশ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এতে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে সাধারণ শিক্ষক ও কর্মচারীদেও মধ্যে। রবিবার থেকে চাঁদা আদায় শুরু হয়েছে। আদায়কৃত টাকা দিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ব্যানারে দরিদ্রদের মধ্যে নাকি ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হবে ?

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নে ১৭ টি প্রাথমিক ও চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদরাসা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭০ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দুই হাজার, সহকারী শিক্ষকদের এক হাজার ও কর্মচারীদের পাঁচশ টাকা করে চাঁদা ধার্য্য করা হয়েছে। আগামি শুক্রবারের মধ্যে চাঁদার টাকা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এক প্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন,‘তাঁকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফোন করেও ওই টাকা তুলে দেওয়ার জন্য বলেছেন।’ তিনি আরও বলেন, অনেক শিক্ষকই কাছাকাছি নেই। এ কারণে খুবই বিপদের মধ্যে আছি।’

কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন,‘আমাদের নাম বলবেন না। কি যে নির্যাতনের মধ্যে আছি, প্রতিবাদও করতে পারছি না। কারণ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হলেন স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।’ এক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক তাঁকে এক হাজার টাকা দেওয়ার জন্য বলেছেন। তিনি দূরে থাকায় বুধবার বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন।

এক ব্যবসায়ী বলেন,‘আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চেয়েছে। আমি তিন হাজার টাকা দিয়েছি।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোঃ ইউনুচ বলেন, ‘কোনো চাপাচাপি করে টাকা নেওয়া হয় না। যে যা পারেন সেটাই নেন। ব্যবসায়ীদেও মধ্যে সবাই দেয় না, এক-দুইজনে দিছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে টাকা তুলছেন। কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন হাওলাদার বলেন,‘চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ ইফসুফ আলী হাওলাদার বলেন,‘যাঁরা স্ব-ইচ্ছায় দিতে আগ্রহী তাঁদের কাছ থেকেই টাকা নেওয়া হচ্ছে। ওই টাকা দিয়ে পাঁচশ নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রত্যেককে প্রায় এক হাজার টাকা মূল্যেও খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হবে।’

অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ সদস্য আসম ফিরোজ মহোদয়কে জানিয়েছি। তাঁর সম্মতি রয়েছে।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২০)