ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার ভোরে প্রয়াত সাবেক ভুমিমন্ত্রী, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ এমপি ইত্তেফাকের ভক্ত ও নিয়মিত পাঠক ছিলেন। ঈশ্বরদী শহরের নিজ বাসভবনে এবং ঢাকার বাসায় তিনি সকালে উঠেই প্রথমে ইত্তেফাক পড়তেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ৩য় পুত্র সাকিবুর রহমান শরীফ কনক। 

২০১৮ সালে ইত্তেফাকের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সাংবাদিক ও সুধিজনদের নিয়ে কেক কাটা অনুষ্ঠানে তদানিন্তন ভুমিমন্ত্রী জনাব শরীফ বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটাতে দৈনিক ইত্তেফাকের অনন্য অবদান রয়েছে। ইত্তেফাকের জন্মলগ্ন হতেই আমি নিয়মিত পাঠক।

ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় মরহুম তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিঞা বস্তুনিষ্ঠ লেখনির মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন হতে শুরু করে, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, পূর্ব বাংলার স্বায়ত্বশাসনের আন্দোলন, ৬ দফা ১১ দফাসহ গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনে পূর্ব বাংলায় বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে দৈনিক ইত্তেফাক সবসময় সোচ্চার ছিল।

ইত্তেফাক আজও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মানবিক মুল্যবোধকে অক্ষুন্ন রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা তথা রূপকল্প বাস্তবায়নে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছেন। আর তাই অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক শক্তির পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক। এসময় তিনি ইত্তেফাকের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছিন। এই সংবাদ ২০১৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী ইত্তেফাকে প্রকাশ হয়েছিল।

এছাড়া ২০১৮ সালের ১১ই জুলাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আয়োজিত পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছিলেন, ‘এদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে দৈনিক ইত্তেফাকের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৫২ হতে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মরহুম তোফজ্জল হোসেন মানিক মিঞা, জহুর হোসেন চৌধুরীর মতো সাংবাদিকদের লেখনী বাংগালি জাতির মুক্তি সংগ্রাম ত্বরান্বিত করেছিল। তাই মানিক মিঞার মতো সাংবাদিকদের প্রতি বাঙালি জাতি চিরদিন কৃতজ্ঞ থাকবে।’ এই খবরটিও ২০১৮ এর ১২ই জুলাই ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়।

ইত্তেফাকের পরম সুহৃদ এই জননেতা শামসুর রহমান শরীফ ২রা এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাঁর কথা এবং কর্মকান্ড এখন শুধুই স্মৃতি।

এই নেতার মৃত্যুতে ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় মরহুম তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিঞার পুত্র এবং জেপি’র সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গভীর শোক প্রকাশ করেন।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ০৩, ২০২০)