নিউজ ডেক্স : কোভিড ১৯ প্রতিরোধে মসজিদ, মন্দির, বৌদ্ধমন্দির, চার্চসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সম্মিলিত প্রার্থনা বন্ধ করার আহবান জানিয়ে ২১জন চিকিৎসকের স্বাক্ষরীত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে আমরা কোভিড১৯ এর সংমক্রণে উদ্ভুত এক মহাদূর্যোগের মুখোমুখি। কোভিড১৯ মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। এই রোগের কোন টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। কোভিড১৯ -র হাত থেকে মুক্ত থাকার প্রধান উপায় হচ্ছে – সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলা ( বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা)।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেন, এজন্য বিশ্বের সর্বত্র রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সমাবেশসহ জনসমাগম হতে পারে এমন সবকিছু আইন দ্বারা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্ত কিছু ধর্মীয় নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তি ধর্মীয় সমাবেশ স্থগিত না করে তা অব্যাহত রাখছে। এর কারণে মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া,ভারতে মুসলিমদের তাবলীগ জামাত ও জামাতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে কোভিড১৯ ছড়িয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় চার্চের প্রার্থনা অনুষ্ঠানের দ্বারা এই রোগের বিস্তার ঘটেছে। আমরা জানি জনসমাগম এবং নামাজের জামাত বন্ধ রাখতে’ মক্কা এবং মদীনার মতো অতি পবিত্র নগরীতেও অনির্দিষ্টকালের জন্য দিনরাত কারফিউ জারি করা হয়েছে।

বিবৃতি দাতারা আক্ষেপ করে বলেন, আমরা অত্যন্ত বেদনার সাথে লক্ষ্য করেছি কিছু আলেম ওলামার অদূরদর্শীতার জন্য বাংলাদেশের মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজ ও পাঞ্জেগানা নামাজ জামাতে পড়া হচ্ছে। এদেশে কোভিড১৯ এখন গণসংক্রমনের প্রথম ধাপে রয়েছে। আমরা আশংকা করছি জামাতে অংশগ্রহন করার মধ্য দিয়ে এই সংমক্রণের ব্যাপক বিস্তারের পথ উন্মুক্ত হবে। তাতে কোভিড১৯ প্রতিরোধের সকল কাজ বিপর্যস্ত হবে।

বিবৃতিদাতারা দাবীতে উল্লেখ করেন, এরকম বাস্তবতায় আমরা নিম্নলিখিত চিকিৎসকগণ কোভিড১৯ এর গণসংক্রমন প্রতিরোধে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়সহ সকল জমায়েত এবং একই সাথে মন্দির, বৌদ্ধমন্দির, চার্চসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে সম্মিলিত প্রার্থনা স্বাস্থ্যবিধি ও রোগতত্ত্বীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আইন প্রয়োগে বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছি। এটি কেবলমাত্র আপদকালীন ব্যবস্থা হবে।

বিবৃতির বিষয়ে বার্তাপ্রেরক ডা. লেলিন চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্বাক্ষরকারী চিকিৎসকগণ

প্রফেসর ডা. রওশন আরা বেগম( স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ), প্রফেসর ডা. আবু সাঈদ ( জনস্বাস্থ্য এবং ডায়াবেটিস গবেষক), প্রফেসর ডা.আশরাফুল ইসলাম সার্জারি বিশেষজ্ঞ), ডা. মুশতাক হোসেন (রোগত্ত্ব বিশেষজ্ঞ, আহ্বায়ক, জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটি ও বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরি পরিষদ সদস্য), ডা. লেলিন চৌধুরী(জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ), ড. আক্তার বানু( পুষ্টিবিজ্ঞানী ও চিকিৎসক) প্রফেসর ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম(শিশুকিশোররোগ বিশেষজ্ঞ), সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিলকিস বেগম চৌধুরী (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ), প্রফেসর ডা. এবিএম জামাল (সার্জারি বিশেষজ্ঞ) ডা. এম আর করিম রেজা( চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ), সহকারী অধ্যাপক ডা. সারওয়ার ইবনে সালাম(হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ),প্রফেসর শফিকুল ইসলাম (চক্ষু), প্রফেসর ডা.ফজলুর রহমান( অ্যানেস্থেসিয়া), প্রফেসর ডা. শাকিল আক্তার ( হাড় ও জোড়া), প্রফেসর ডা. আ খালেক (চক্ষু), ডা. নুপুর আক্তার, প্রফেসর ডা. আরিফুর রহমান ( শিশু সার্জারি), প্রফেসর ডা.রোকসানা দিল আফরোজ (ঔষধবিজ্ঞান)। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০৪, ২০২০)