শরীয়তপুর প্রতিনিধি : করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কি না এমন নমুনা সংগ্রহের কথা শুনেই শরীয়তপুর সদর হাসপতাল থেকে এক নারীর মৃতদেহ নিয়ে পালিয়ে গেছে তার স্বজনরা। শনিবার সকাল ৯ টায় জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া ওই নারীর নাম মিতু বেগম (৩৫)। তিনি শরীযতপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের শহিদুল মাদবরের স্ত্রী। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুখ আহমেদ মোল্যা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রচন্ড মাথা ব্যথা ও বমি হওয়ায় সকালে নিহত মিতু বেগমকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। সেখানে ভর্তি করার পর সে মৃত্যুবরণ করেন। প্রশাসনের উপস্থিতিতে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিহতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনির আহমেদ খান জানান, শনিবার সকাল ৯ টার দিকে জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে নিপা বেগমকে নিয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসেন তার স্বজনরা। তৎক্ষনাৎ তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর জরুরী বিভাগ থেকে হাসপাতালের দোতালায় নারী ওয়ার্ডে নেয়া হলে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সে মৃত্যুবরণ করেন। তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কি না তা নিশ্চিত হতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহের প্রস্তুতি গ্রহন করে। নমুনা সংগ্রহের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়া হলে স্বজনরা তার মৃত্যু সনদ নিয়ে নমুনা সংগ্রহের সুযোগ না দিয়েই হাসপাতাল থেকে চলে যায়।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ও জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার রণেশ বোস বলেন, রুগীকে প্রায় অচেতন (আন-কনসাস) অবস্থায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করে। তাকে প্রাথমিকভাবে দেখে ভর্তি নেয়া হয়। এরপর ওয়ার্ডে নিয়ে বেডে দেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। আমি তার মৃত্যু সনদ লিখে দিয়ে তার শরীরে করোনা ভাইরাস ছিল কিনা এমন নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করে অপর রুগী দেখতে জরুরী বিভাগে যাওয়ার পর স্বজনরা নমুনা না দিয়েই মৃতদেহ নিয়ে কিভাবে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তা আমি জানিনা।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে আমি পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, একজন চিকিৎসক ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাকে নিয়ে শনিবার দুপুর ১ টায় নিহতের বাড়িতে পৌছি। তার শরীর থেকে প্রথমে নমুনা সংগ্রহের পর স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী তার জানাজা নামাজ ও দাফন সম্পন্ন করা হয়। নিহতের পরিবার ও আশেপাশের চারটি পরিবারের ৭ সদস্যকে হোম কোয়ারাইন্টানে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(কেএনআই/এসপি/এপ্রিল ০৪, ২০২০)