নড়াইল প্রতিনিধি : আজ রবিবার আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯০তম জন্মদিন।

১৯২৪ সালের এই দিনে (১০ আগস্ট) নড়াইল জেলার মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এসএম সুলতানের আসল নাম ছিল লাল মিয়া। তার বাবার নাম মেছের আলী ও মার নাম মাজু বিবি।

ছোটবেলা থেকেই তার ছবি আঁকার সূত্রপাত। তার ছবিতে বাংলার কৃষক-কৃষাণি অঙ্কিত হয়েছে বীর হিসেবে।

মাত্র ১১ বছর বয়সে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের একটি প্রতিকৃতি অংকন করে তাক লাগিয়ে দেন তিনি।

স্কুল পরীক্ষায় পাস না করেই তিনি পালিয়ে যান কলকাতায়। সেখানে শিল্প-সমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে দেখা করেন। শিল্প-সমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দী তার কাজ দেখে বিস্মিত হন। তার সুপারিশে কলকাতা আর্ট স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ পান সুলতান। ১৯৪৫ সালে তিনি বেরিয়ে পড়েন ভারত দর্শনে।

১৯৪৭ সালে ভারতের সিমলায় প্রথম একক প্রদর্শনী করেন সুলতান। দেশে চারটি দলবদ্ধ, দু’টি একক চিত্র প্রদর্শনী এবং লন্ডনে একটি দলবদ্ধ প্রদর্শনী করেছেন তিনি। প্রথম বৃক্ষরোপণ, চর দখল, মাছ ধরা, মাছ কাটা, ফসল কাটা ইত্যাদি তার বিখ্যাত চিত্রকর্ম।

কৃষক, জেলে, কামার, কুমার তথা পল্লীর শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা, সংগ্রাম, সমস্যা-সংকট তার চিত্রের ক্যানভাসে উদ্ভাসিত।

চিত্রের অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে খড়ের ঘর, খাল-বিল, গাছপালা, সনাতন চাষের উপকরণ, মাছ ধরার গ্রামীণ সরঞ্জাম, সংগ্রামের প্রতীক ঢাল, সড়কি, রামদা বল্লম, লাঠি।

স্বীকৃতি ও সম্মাননা: শান্তিপ্রিয় সুলতান চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে ১৯৮২ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের ‘রেসিডেন্ট আর্টিস্ট’ স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা লাভ করেন।

এছাড়াও তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’ নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার লাভ করেন।

দেশ সেরা চিত্রশিল্পী এসএস সুলতান শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে তাকে তার প্রিয় জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রামে শায়িত করা হয়।

(টিএআর/এইচআর/আগস্ট ১০, ২০১৪)