রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মসজিদ উন্নয়নের জন্য টাকা না দেওয়ায় ছেলেকে হুমকির প্রতিবাদ করতে যেয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এক বৃদ্ধকে। শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়।

নিহতের নাম শওকত সরদার (৬০)। তিনি সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে ও দেশব্যাপী আলোচিত রক্তনালির টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরনকারি সাতক্ষীরার দক্ষিণ কামারবায়সার মুক্তামনির নানা।

উত্তর শিবনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান চঞ্চল জানান, গত শুক্রবার তিনি তাদের বাড়ির পাশের মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে তার কাছে মসজিদ উন্নয়নের টাকা চান একই গ্রামের ফজলুর রহমান সরদারের ছেলে শামীম হোসেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শামীমতাকে মসজিদের মধ্যেই গালিগালাজ করে। বাড়িতে যেয়ে তিনি বিষয়টি তার বাবা শওকত হোসেনকে জানান। বাবা সেই মুহুর্তে মসজিদের সামনে এসে শামিমের পিতা ফজলুল হকের কাছে প্রতিবাদ জানায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এ সময় শামিমের নেতৃত্বে ফজলুর রহমান, শামীমের মা তাঞ্জিলা, শামীমের মামা ফারুক হোসেন, শরিফুল ইসলাম, আজিবর সরদারের স্ত্রী ফরিদাসহ কয়েকজন তার বাবাকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। বাবাকে রক্সায় এগিয়ে গেলে ভাই ইমন ও তাকে পিটিয়ে জখম করা হয়। মারাত্মক রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে নিয়ে গ্রাম ডাক্তার প্রদীপ মণ্ডলের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে তার বোন আসমা ও ভগ্নিপতি ইব্রাহীম হোসেনসহ কয়েকজন বাবা ও ইমনকে উদ্ধার করে বিকেল তিনটার দিকে সাতক্ষীরা সদও হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাবাকে বিকেল ৫টার দিকে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বাবার মৃত্যু হয়। ময়না তদন্ত শেষে বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফনের পর থানায় মামলা করা হবে।

খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালের নিউরোলোজি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ রিয়াজুল হক জানান, অধিক রক্তক্ষরণ জনিত কারণে শওকত সরদারের মৃত্যু হয়েছে।

জানতে চাইলে ফজলুল হক সরদার বলেন, মসজিদ উন্নয়নের টাকা চাওয়া নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মাটিতে পড়ে যেয়ে শওকত ও ইমন আহত হয়। তবে শওকত সরদার মারা গেছেন কিনা সেটা তার জানা নেই।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা রেকর্ড করে আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২০)