আলাউদ্দিন হোসেন


বিশ্বজুড়ে যখন একটি আতংক ছড়িয়ে পড়েছে,যার ভয়ে কোটি কোটি মানুষ আতংকিত। পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে আতংকের শেষ নেই। ঠিক এমন সময় পৃথিবীর মানুষগুলো আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করছে, ক্ষমা চাচ্ছে। চলছে আল্লাহর দরবারে আরাধনা।

আল্লাহর প্রার্থনা করতে বা নামাজ পড়তে যখন মসজিদে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তখন আর কি বাকি থাকে মানব জাতির।

চীনের মত দেশ যেখানে অসহায়, ইতালির মত দেশ যেখানে ভাইরাস থেকে রক্ষার কোন পথ খুজে পাচ্ছে না,আমেরিকার নাগরিকদের মৃত্যু মিছিল চলছে হরদম। সারাবিশ্বে এখন একটাই আতংক, একটাই ভয়, কখন যেন করোনা আক্রমণ করে বসে, কখন যেন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পৃথিবীছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে যেতে হয়।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যখন করোনা ভাইরাসে আতংকিত,প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছে না, সেখানে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশ কিভাবে কি করবে সেকথা কি একবারও ভেবে দেখেছেন? পৃথিবীজুড়ে লাশের মিছিল চলছে, একটার পর একটা লাশের সারি,বিশ্বজুড়ে জনমনে আতংক। কখন যেন মরণ হয়।

ঘরের বাহিরে যাওয়া যাবে না!কর্মসূচি বন্ধ, অফিস আদালত বন্ধ, সমস্থ কাজকর্ম বন্ধ ঘোষণা! এসব যদি দিনের পর দিন বন্ধ থাকে সাধারণ মানুষ তো না খেয়ে মারা যাবে। পৃথিবী নামক আজব এ ভূমন্ডলে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে এটা এড়াতে দেশের সরকার সরকারিভাবে দেশব্যাপী ঘরে ঘরে বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিবে, যাতে করে দেশের জনগণকে না খেয়ে এ পৃথিবী থেকে বিদায় না নিতে হয়।

মহামারী করোনা এড়াতে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হবে,তার পর দেশের জনগণের সেবা করা হবে সরকারের প্রধান কার্য। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ভালোই চলছে ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ, চলছে কিছু অনুন্নত দেশেও।

পৃথিবীর অনেক দেশ আজ লকডাউনে ঘেড়া,জনগনের স্বার্থে সরকারি /বেসরকারি সংস্থা বিভিন্নভাবে ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে, যাতে করে দেশের জনগণ খাদ্যাভাবে ক্ষুধার্ত অবস্থায় মারা না যায়।

আমেরিকা বলেন, ইতালি বলেন আর চীন বলেন এরা সব সময় জনগনের কথা চিন্তাভাবনা করে থাকেন। কিভাবে এগিয়ে আসলে জনগণ সুবিধাবঞ্চিত হবে না, কিভাবে পাশে দাঁড়ালে সব সুবিধা উপভোগ করবে,তারা সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে চলছে প্রতিনিয়ত। করোনা আতংকেও তারা জনগনের পাশেই আছেন।

আসুন, এবার বাংলাদেশ নামক একটা দেশের কথা বলি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন দিয়ে পৃথিবীর বুকে লাল সবুজে আঁকা একটি স্বাধীন দেশ আমজনতার মাঝে দান করে গেছেন। উন্নয়নশীল এই দেশ অনেককিছুতেই বেশ পারদর্শী। মহামারী করোনা এড়াতে প্রথমে কাউকে মাঠে না দেখলেও পরে আস্তে আস্তে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে থাকেন।

কঠিন এ ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে মানুষনকে রক্ষা করার জন্য দেশ যখন লকডাউনে নিমজ্জিত তখন জনগণের বেঁচে থাকার জন্য সরকারিভাবে ত্রাণ-সামগ্রী বিলি করার প্লান চলে আসে,না হলে আমজনতা বা দিনমজুররা কি খেয়ে বেঁচে থাকবে?

নিঃসন্দেহে এটা ভালো উদ্যোগ, কিন্তু কারা কিভাবে এই ত্রাণ-সামগ্রী জনগণের মাঝে বিতরণ করবে,কারা পাবে কারা পাবে না এই নিয়ে অনেক প্লান চলে,খেটে খাওয়া দিনমজুর,শ্রমিক এরা এইসব ত্রাণের খাদ্য পাবে।

মহামারী করোনার দিনেও চলে দুর্নীতি আর একচেখা কাজকর্ম। খেটে খাওয়া শ্রমিক, দিনমজুরের ত্রাণ-সামগ্রী চলে যায় ধনীদের ঘরে,দিনমজুর,শ্রমিক এরা যে পাচ্ছে না তা কিন্তু ঠিক নয়, তাদের পাশাপাশি অনেক পরিবারের সবাই পাচ্ছে আবার

দেখা যাচ্ছে অন্য পরিবারের কেওই পাচ্ছে না, এই যে না পাওয়ার বেদনাটা খেটে খাওয়া, দিনমজু, শ্রমিক এদের মনে গেঁথে যাচ্ছে।

দলীয় লোকজন ঠিকই পাচ্ছে করোনার ত্রাণ-সামগ্রী,এই মহামারি দুর্দিনেও যে দেশে দুর্নীতি চলে তার নাম বাংলাদেশ, দুঃখের সাথে বলে যাচ্ছি, আমরা এমনই এক জাতি, নিজেদের খাবার নিজেরাই ভাগাভাগি করে খেতে জানি না!!!

লেখক : শিক্ষার্থী (এম.বি.এ) সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, পাবনা।