মানিক বৈরাগী


মহান মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক খুনি রাজাকার মজাকার আওয়ামীলীগ মন্ত্রী এমপি নেতাদের সহায়তায় আওয়ামীলীগে স্থান করে নেয়।এবং তারাই পরবর্তীতে খুব প্রভাবশালী হিসাবে প্রশাসনে দাপিয়ে বেড়ায়। এসব খুনি রাজাকার মজাকারদের যেসব নেতারা দলে স্থান করে দিয়েছিলো পরবর্তীতে তাদেরকেই তারা কিক মেরে কোনঠাসা করেদেয়। বর্তমান সরকারের সময়েও তাই দেখছি। ঘটছে একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বঙ্গবন্ধু যাদের কেই বেশি বিশ্বাস ও নির্ভর করেছিলেন তারাই ৭৫র ঘটনার সাথে কেউ কেউ ওতপ্রোতভাবে জড়িত কেউ কেউ পরবর্তী সুবিধাভোগী।

আপনাদের মনে আছে কি-না কোটালি পাড়া বঙ্গকন্যার জনসভা উপলক্ষে মঞ্চের অতি নিকটে পুকুরে বোমা পুতে রাখার ঘটনা। সেই অপরাধ কর্মে জঙ্গি মুফতি হান্নান যাকে ব্যবহার করেছিলেন তিনি সে কিন্তু উক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা ও কমিটির সহ সভাপতি।

এই সংঘটনের অনেক নেতাদের সাথে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে সখ্যতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু সেইসব নেতাদের কাছে কোন প্রকার জবাবদিহি চাওয়া হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও অনেক সময় বক্তব্যে বলেন এতো গুলো নেতা থাকতে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে থাকলো কিন্তু কেউ দেখতেও গেলো না। ঠিক একিভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন তবুও বিমানের নাটবল্টু খোলে যায়।বিমানের তেল ফুরিয়ে যায়।

দুর্ধর্ষ টেন্ডারবাজ জিকে শামিম নিরাপত্তারক্ষী এস এস সেফ কে ডিঙ্গিয়ে কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি হাঠে।সেইসব ছবিতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ক্যাসিনো কান্ডে দেখা গেছে অনেক ফ্রীডম পার্টির ক্যাডার খুনি আবার যুবলীগের বড় বড় নেতা বনে গেছেন। সেই সব ক্যাসিনো ক্যাডারেরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক আত্মীয়ের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে র খবর ও ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

পাপিয়া কান্ডে অনেক বড় বড় নেতা আমলা মন্ত্রী এমপির নাম বাতাসে ভাসে। কিন্তু এখনো তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বলা যায় তাদের ভাগ্য খুব ভালো বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দেশ আজ অনিশ্চয়তার মাঝে। এই অনিশ্চয়তার ভেতরে খুব গোপনে দেশে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি পলাতক আসামি ক্যাপ্টেন (অবঃ)আবদুল মাজেদ।

খুনি মাজেদের পরিবার এখনো বসবাস করে সেনানিবাসের সেনা সদস্যদের আবাসস্থলে। খুনি মাজেদের আত্মীয়স্বজন ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে আওয়ামীলীগ ও তার বহু অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ভেতর। এভাবেই কতো খুনির স্বজনেরা বিভিন্ন কৌশলে মোনাফেক বেইমান নেতাদের হাত ধরে জায়গা করে নিয়েছে তার হিসাব নেই। এই খুনির নাতি দখল করে নিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ।

কি রকম আদর্শহীন হলে কি পরিমাণ রাজনৈতিক মোনাফেক হলে উপরস্থ নেতারা এমন জঘন্য পাপ করতে পারে।
জায়গা করে নিয়েছে খুনি রাজাকার যুদ্ধাপরাধী ও জামাত শিবিরের কতো ক্যাডার।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে থাকলে এখনো আওয়ামীলীগের কার্যক্রম এনালগ পদ্ধতিতে চলে। লড়াই সংগ্রামের ঐতিহ্যের বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের পরতে পরতে এখন মোনাফেক বেইমান ষড়যন্ত্রকারীদের শক্ত অবস্থানে। চারদিকে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচল।

এসব নৈতিকতা হীন রাজনৈতিক দেওলিয়া পনা দেখে খুব কষ্ট লাগে। অনেকেই বলে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না থাকলে নেতারা আদর্শের কান্ডারী দেশ জন দরদী, ক্ষমতায় গেলে পরিবার পরিজন আত্মীয় দরদী ও লুটেরা। আওয়ামীলীগের জন্য দুর্দিনে যেসব নিবেদিত মেহনতী মানুষের সন্তানেরা আওয়ামীলীগ কে ক্ষমতায় বসানোর জন্য জীবন যৌবন উৎসর্গ করে ক্ষমতায় এলে তাদের প্রাপ্যহয় লাঞ্চনা গঞ্জনা অবহেলা, অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবাদী কর্মীরা পায় হয়রানি মামলা।

আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় থাকেনা তখন আওয়ামী রাজনীতি ও নেতারা হয় অসাম্প্রদায়িক আর ক্ষমতায় এলে হয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বন্ধু। এ জাতির কপালে বড়ো দুঃখ। এ আওয়ামীলীগের কপালেও বড়ো দুঃখ আছে। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির বড়ো কান্ডারী শেখ হাসিনা যদি এখনই দলের পরিচালার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দল পরিচালনার কার্যকর পদক্ষেপ না নেন অচিরেই আবারও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে দেরি নেই।

করোনা ভাইরাস সংকট কাটিয়ে উঠার পরে আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন গুলো ঢেলে না সাজালে মহা বিপদ। আশাকরি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয় টি উপলব্ধি করবেন। আমিন।

লেখক :কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত প্রগতিশীল ছাত্রনেতা, কক্সবাজার।