প্রবীর সিকদার


১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ভোলা-২ আসনে তথা বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখানের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিব। পরে তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন। বর্তমানে ওই আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি আলী আজম মুকুল। ওই এলাকাতেই বাড়ি বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদের।

এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের পরিবারকে পৃষ্ঠপোষকতা করেন বর্তমান এমপি আলী আজম মুকুলের ঘনিষ্ঠ জনেরা। কেউ কেউ বলেন, আলী আজম মুকুল এটা জানার পর তার ওই ঘনিষ্ঠজনদের নিষেধও করেছেন! কিন্তু কেউ তার কথা শোনে না। এব্যাপারে অবশ্য ভিন্নমতও রয়েছে, এমপি মুকুল নিষেধ করবেন, কেউ শুনবে না, এটা হতেই পারে না! এখানে শর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। এই আলী আজম মুকুল আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপির ভাতিজা।

ঢাকায় খুনি মাজেদ গ্রেফতারের খবরে বোরহানউদ্দিনে চায়ের কাপে বইছে ঝড়! যে আসনে একবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আজ সেই এলাকাতেই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের পরিবারকে পৃষ্ঠপোষকতা করেন এলাকারই আওয়ামীলীগ দলীয় এমপির ঘনিষ্ঠজনেরা কিংবা এমপি নিজেই! এই পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টি যে ভুয়া নয়, সেটা তো এলাকার মানুষের মুখে মুখেই ফিরছে। এতদিন মুখ ফুটে বলতে পারছিলেন না কেউ, খুনি মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার খবরে এখন অনেকেই মুখ ফুটেই বলছেন। এমপি মুকুলের ঘনিষ্ঠজনেরাই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের নাতি মুজিব উল্যাহ ওরফে পলাশ মিয়াকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছে্ন! কিছু বঙ্গবন্ধু ভক্তের অস্ফুট প্রতিবাদের কারণে যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুজিব উল্যাহ ওরফে পলাশ মিয়া, সেই কমিটিকে একবার স্থগিত করা করা হয়েছিল। পরে ওই প্রভাবশালী মহলের চাপে সেই কমিটিকে আবার বহাল করা হয়! এলাকায় এখন এটাও বলাবলি হচ্ছে, খুনি মাজেদের পরিবারের এক নারী সদস্যকে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের চাকুরিও পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল! পরে এলাকার মানুষের অস্ফুট আপত্তির মুখে ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিকে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়!

বোরহানউদ্দিনের মানুষের মুখে এখন একটাই আর্জি, যে এলাকা থেকে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেই এলাকায় বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের পরিবারকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন, যারা স্বাধীনতা বিরোধীদের দলে জায়গা করে দেন, তাদেরকে এখনই চিহিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুধু জরুরি নয়, অনিবার্যও; সেক্ষেত্রে এমপি মুকুল নিজেও যদি ওই চক্রের মদদদাতা হন, ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তার বিরুদ্ধেও।