চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনা জেলার প্রথম করোনা পজিটিভ আসা চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রামের ওই যুবক (৩২) কে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় (রাত ১১.২০ মি.) চাটমোহর উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। 

চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শুয়াইবুর রহমান জানান, তার করোনা পজিটিভ আসার পর বিষয়টি ঢাকায় আইইডিসিআরকে জানানো হয়। সেখান থেকে নির্দেশনা পাবার পর সব নিয়ম কানুন অনুসরণ করে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা রোগী পরিবহণের জন্য একটি আলাদা অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া তার সংস্পর্শে আসা পরিবারের ১৩ জন সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পাবনার সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল এই প্রথম পাবনায় করোনা রোগী সনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনি নারায়নগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসার পর অসুস্থ্য হলে গত ১৪ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে পজিটিভ।

চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুয়াইবুর রহমান জানান, নারায়নগঞ্জে কর্মরত ওই ব্যক্তি গ্রামের বাড়িতে আসার পর আমরা খবর পেয়েই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাই। আর তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়। তিনি জানান,ওই ব্যক্তির নমুনার ফলাফল ১৬ এপ্রিল পাবনায় আসে। রিপোর্টে বলা হয় ওই ব্যক্তির করোনা পজিটিভ। তিনি জানান, করোনা সনাক্ত ওই পরিবারের ৯ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৭ এপ্রিল জহুরুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই শাহিন নারায়নগঞ্জ থেকে পালিয়ে রাতের আঁধারে চাটমোহরের নিজ বাড়িতে আসে। তারা নারায়নগঞ্জের চাষারা উপজেলায় টাইলস্ মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতো। তিনি কয়েকদিন শ্বশুরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরাও করেছেন। বিষয়টি ওই সময় গ্রামবাসী প্রশাসনকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, থানার ওসি সেখ মো. নাসীর উদ্দিন এবং মেডিকেল অফিসার রুহুল কুদ্দুস ডলারসহ একটি মেডিকেল টিম নিয়ে ওই গ্রামের গিয়েছিলাম। বামনগ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীর অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। তার তেমন কোনো লক্ষণ নেই। তবে যেহেতু করোনা পজিটিভ আসছে, সে কারণে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আপাতত বাড়িতেই হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আইইডিসিআরকে তার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আর পুরো চাটমোহর উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ১৭, ২০২০)