আলাউদ্দিন হোসেন 


মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সরকারের তত্ত্বাবধানে জনপ্রতিনিধিদের বা প্রশাসনের মাধ্যমে দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর এলাকায় লকডাউন ঘোষণা ও হোম কোয়ারেন্টাইম এর ঘোষণা করা হলে দেশের জনগণের কাজকর্ম বন্ধ হওয়ার ধরুন সরকার গরীব দুঃখী, খেটে খাওয়া দিন মজুর ও হতদরিদ্র পরিবারের কথা চিন্তা করে অনেক মোটা অংকের বাজেট ঘোষণা করেন।

জেলায় জেলায় লকডাউন ও বিভিন্ন এলাকা লকডাউনের ফলে মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইম এ আছেন এবং তাদের কাজকর্ম একেবারে বন্ধ। হোম কোয়ারেন্টাইম ও লকডাউন ঘোষণা করার ফলে জনগণকে বাড়ির বাইরে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না, জন জীবন অচল প্রায়।

এই মহামারীতে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে সরকার বাজেট ঘোষণা করে সে বাজেট জনপ্রতিনিধিদের কাছে বন্টন করার দায়িত্ব দিছেন,বাস্তব চিত্রে দেখা যাচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের অনেকে এই মহামারীতেও বাজেটেে ত্রাণ-সামগ্রী সঠিকভাবে বন্টন না করে আত্মসাৎ করছে। খবরের কাগজগুলোতে ও অনলাইন পোর্টালগুলোতে প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে দেশে ত্রাণ চুরির মহাৎসব চলছে।

সরকার যাদের জন্য বা যাদের কথা চিন্তা করে এত বড় অংকের বাজেট ঘোষণা করলেন তারাই এ ত্রাণ-সামগ্রী পাচ্ছে না। আমি আপনি বললো তাহলে এই ত্রাণ-সামগ্রী পাচ্ছে কারা? ভালোকরে খোঁজ নিয়ে দেখুন,এই ত্রাণের যা বিতরণ হচ্ছে তার অধিকাংশ পাচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আত্মীয় স্বজন ও খুব কাছের নেতা-খেতা।

সরকারের পাশাপাশি অনেক প্রাইভেট সংগঠনও নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করছেন, সেখানেও যারা প্রকৃত অর্থেই গরবী দুঃখী, দিন মজুর তাদের অধিকাংশ পরিবারই পাচ্ছে না ত্রাণ।

আবার সরকার যেখানে আইন করে দিলেন যে, ত্রাণের খাদ্য-সামগ্রী অনাহারে থাকা জনগণের বাড়ি বাড়ি পৌঁছাতে হবে, সেখানেও উল্টো চিত্র। যারাই বা ত্রাণের এই চাল, ডাল, তেল ইত্যাদি পাচ্ছে, তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে এগুলো সংগ্রহ করতে হচ্ছে ।

এত বাজেট ঘোষণা, এত ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করা সত্বেও দেশে লাখো হতদরিদ্র পরিবারের স্বজনদের ক্ষুধার জ্বালায় আহাজারি করতে দেখা যাচ্ছে। যাদের ঘরে খাদ্যের অভাব নেই তারা পাচ্ছে, অথচ দেশের হতদরিদ্র পরিবার দু'বেলা দুমুঠো না খেতে পেরে আহাজারি করছে, এগুলো দেখার মানুষ দেশে খুব কমই আছে।

ভোটের সময় মেম্বার, চেয়ারম্যান, মেওর ও এমপিরা হতদরিদ্র পরিবারের পা চেপে ধরলেও এখন তাদের দেখা মিলছে না, কারা অনাহারে আছে তাদের খোঁজ নেওয়ার কেউ যেন নেই এই দূরদিনে।

জনপ্রতিনিধিদের এই ভয়ানক মহামারীতে জনগণের পাশে থেকে তাদের সেবা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ, ক্ষুধার্তদের আহাজারি বন্ধ করে তাদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য-সামগ্রী পৌঁছে দেওয়াই বড় জনসেবা।

একচোখা নেতাদের কথা নাই বলি আর, দেশে যারা এই মহামারীতে নিজেদের অর্থায়নে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করছেন তাদর প্রতি একটাই অনুরদ, প্রকৃত গরীব দুঃখী, খেটে-খাওয়া দিন মজুর ও হতদরিদ্র পরিবার খুঁজে বের করে তাদরে বাড়ি বাড়ি খাদ্য-সামগ্রী পৌঁছে দিন, যাতেকরে খাদ্যাভাবে দেশে কেউ মারা না যায়।

লেখক : শিক্ষার্থী (এমবিএ), সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, পাবনা।