মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলার মতো এমন দৃশ্য থেকে সেদিন রক্ষা পেয়েছে নবীগঞ্জবাসী। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এর সময়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনা ও দৃঢ় সিদ্ধান্তে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ভূমিকার জন্য এমন দৃশ্যের অবতারণা হবিগঞ্জ এ হতে পারে নাই ।

জেলা প্রশাসকের এমন অনেক সময়োপযোগী দৃঢ়চেতা সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ এখনো করোনা ভাইরাস সংক্রমনে নিরাপদ অবস্থানে আছে নবীগঞ্জ উপজেলা তথা হবিগঞ্জ জেলা। যদিও নারায়নগঞ্জ থেকে আসা এক শ্রমিকের করোনা সনাক্ত হয়েছে।

জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গার ইমামবাড়িতে ইন্তেকাল করেন বাংলাদেশের প্রাচীন ইসলামি রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি, শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল মুমিন শায়খে ইমামবাড়ি।

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সিলেটসহ সারাদেশে, বিশেষ করে আলেমসমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরদিন ৮ এপ্রিল বেলা ২.৩০ মিনিটে নিজ বাড়ি সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এর সময়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনায় হুসাইন আহমদ মাদানী রহ-এর বিশিষ্ট খলিফা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি প্রথিতযশা এই আলেমের জানাযায় বাহিরের কোন লেক অংশগ্রহণ করতে পারেননি। বিশিষ্ট এই এই আলেমের জানাযায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে অনেক আলেম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা প্রশাসনের বাধার মূখে হবিগঞ্জে প্রবেশ করতে পারেননি।

এক্ষেত্রে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ও সেনাবাহিনীর ভুমিকা ছিল প্রশংসা করার মত। এ ছাড়াও মরহুমের পরিবারের সদস্যদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জনসমাগম এর মাধ্যমে জানাজা পড়ার ভয়াবহতা বুঝানো হলে তারা সমর্থন দেয়। বাইরের এলাকা থেকে হবিগঞ্জ জেলায় কাউকে প্রবেশের বাধা দিয়ে ঢুকতে দেয়া হয়নি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জেলার লকডাউন উপেক্ষা করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই লাখো মানুষের জমায়েত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। খ্যাতিমান ইসলামী আলোচক ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে। গত শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় প্রশাসন এ অবস্থায় নীরব ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়লো। এ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় চলছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সবাই প্রশ্ন তুলেছেন।

এরই প্রেক্ষিতে সচেতন মহলের ভাষ্য, হবিগঞ্জের প্রশাসনের কঠের অবস্থানের কারণে এমন দৃশ্য থেকে রক্ষা পেয়েছে নবীগঞ্জ তথা হবিগঞ্জবাসী।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল মুমিন শায়খে ইমামবাড়ির জানাযায় বাহিরের এলাকার লোকজনের অংশগ্রহনের সুযোগ দিলে হয়তো আজ হবিগঞ্জ জেলা স্বাস্থ ঝুঁকিতে থাকতো। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে এমন ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে হবিগঞ্জ জেলা।

এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ এর আলেম ওলামা ও তাঁর পরিবার এর সহযোগিতায়ও ছিল প্রশংসনীয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট ধন্যবাদ পাবার যোগ্য।

(এম/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২০)