স্টাফ রিপোর্টার : গার্মেন্টসের ১৫ শতাংশ শ্রমিক এখনো মার্চ মাসের বেতন পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন। বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সপ্তম বার্ষিকী- কোভিড-১৯ : সংকটের মুখে শ্রমিক ও মালিক- সরকারি উদ্যোগ ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স’র কাজ চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়ে আমিন বলেন, রানা প্লাজার পর গার্মেন্টস খাতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ উন্নতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই উন্নয়নের একটা পর্যায়ে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স কাজ বন্ধ করে দিতে হবে এমন একটা মানুষিকতা তৈরি হলো।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কাজ আরএমজি সাসটেইনিবিলিটি কাউন্সিলের (আরএসসি) কাছে হস্তান্তর করা চুক্তি হয়েছে। আমার মনে হয় আরএসসি এখনো পর্যন্ত তার দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রস্তুত নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ও বায়ারদের সঙ্গে চুক্তি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স কাজ যেন বন্ধ না করা হয়।

যেসব কারখানা চালু রয়েছে সেগুলো কালো তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আমিরুল হক আমিন বলেন, এখনো পর্যন্ত অনেক কারখানা চালু আছে। তারা কিন্তু পিপিই বা মাস্ক তৈরি করছেন না, তারা নিজেদের কাজ বহাল রেখেছে। যেখানে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে, যেখানে বিজিএমইএ অনুরোধ করেছে, তারপরও তারা সরকারের ঘোষণা অমান্য করে কিভাবে কারখানা চালু রাখে? এদের চিহ্নিত করা দরকার। প্রয়োজনে এদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। কারণ সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক অ্যাফেক্টেড হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ। এই দুর্যোগ মুহুর্তেও প্রায় ১৫ শতাংশ শ্রমিক তাদের বেতন-ভাতা পাননি। এই হারটা আরও বেশিও হতে পারে। যারা এই দুর্যোগের সময় এখনো পর্যন্ত শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেয়নি, এরা কোন ধরনের মালিক? তাদের চিহ্নিত করা দরকার এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন যে সমস্ত কারখানা বেতন-ভাতা দিয়েছেন, তার মধ্যে বেশকিছু চার-পাঁচ দিনের টাকা কেটে রেখেছেন। আমরা মনে করি সামনে যারা বেতন দিবেন তারা যেন সাধারণ ছুটির চার দিনের বেতন না কাটেন। আর যারা বেতন দিয়েছেন তারা যেন এই চারদিনের বেতন দিয়ে দেন।

এই শ্রমিক নেতা বলেন, অনেক কারখানা লে অফের নোটিশ দিয়েছেন। যখন সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়, তখন কোনো সেক্টর থেকে আইন অনুযায়ী লে অফ ঘোষণার সুযোগ থাকে না।

যতদিন সাধারণ ছুটি থাকবে ততদিন গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিএমই যথেষ্ট শক্তিশালী। তাদের যথেষ্ট জনবল রয়েছে। যতদিন সরকারের সাধারণ ছুটি থাকবে ততদিন যাতে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২০)