মানিক সরকার মানিক, রংপুর : সুস্থ রংপুর ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মাত্র ক’দিন আগেও করোনা আক্রান্ত নিয়ে এখানকার মানুষের মাঝে ছিল না আতংক উৎকণ্ঠা। কিন্তু দুদিনে শুধু খোদ মহানগরীতেই ৩জনসহ জেলায় মোট ১০জন আক্রান্ত হয়ে পড়ায় সেই আতংক উৎকণ্ঠা এখন ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। আক্রান্তদের অধিকাংশের উৎসই নারায়নগঞ্জ এবং গাইবান্ধা। 

স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, এ পর্যন্ত যারা আক্রান্ত তারা ধরা পড়ার অনেক আগেই আক্রান্ত হয়েছেন এবং মেলামেশা করেছেন অনেকের সঙ্গে। ফলে তাদেরও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়ার মত নয়। এতে করে সার্বিক পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যেতে পারে তা নিয়ে উৎকণ্ঠিত নগরবাসী। কিন্তু তারপরও জাগ্রত হচ্ছে না মানুষের সচেতনতাবোধ।

জেলাকে ভোইরাস মুক্ত করতে বিভাগীয়, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের শত চেষ্টাতেও রোধ করা যাচ্ছে সাধারণ মানুষকে ঘরমুখো করতে। ইতোমধ্যেই নগরকে লক ডাউন করেছে প্রশাসন। তারপরও থেমে নেই মানুষের অবাধ চলাচল। বরং সবকিছুই স্বাভাবিক আগের মতই। প্রতিদিন ভোর ৬ টা/৭টাতেই শুরু হয়ে যায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দোকান খুলে মালামাল বেচাকেনা। এই চিত্র মেলে নগরীর সিটি ও নবাবগঞ্জ বাজার, বেতপট্রি, হাড়িপট্রি, কাছারি এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন শত চেষ্টা চালিয়েও রোধ করতে পারছেন না এই অতিলোভি ব্যবসায়ীদের।

র‌্যাব, পুলিশ সেনা সদস্যরা ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী শত চেষ্টা চালিয়েও যেন হিমশিম খাচ্ছেন জনগনকে সচেতন করতে। বিশেষ করে কাঁচা বাজার, টিসিবি ও ও.এম,এসের দেয়া খাদ্য সামগ্রির স্থানগুলোতে কোনভাবেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। অনেকেই ব্যবহার করছেন না, মাস্ক কিংবা প্রতিরোধক কোন ব্যবস্থা। কেউবা ব্যবহার করলেও সেই মাস্ক ঝুলছে কানে কিংবা থুতনিতে।

একজনের ঘারের উপর আরেকজন চড়ে পারেতো কে কার আগে নেয়। কিছু সময়ের জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিলে পরিস্থিতি সাময়িক স্বাভাবিক হলেও তারা চলে গেলে আবার যা তাই। এতে করে ভাইরাসের ভয়াবহতা কোন পর্যাঁয়ে পৌছাঁতে পারে তা কেউই অনুধাবন করতে চাইছে না। আর তাইতো সচেতন মহল বলছেন, আসলে ‘মাইরের উপর ওষুধ নাই’। তাদের মতে, কারোর শরীরে লাঠিচার্জ কিংবা আঘাত করা মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও বিশেষ ক্ষেত্রে এবং জাতির স্বার্থে সবকিছুই প্রয়োজন। এ সময় কোন কিছুই খোলা রাখা যাবে না। কিন্তু এর কোনটাই মানা হচ্ছে না রংপুরে।

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, কাঁচানবাজারের পাশাপাশি নিত্য প্রয়েনাজনীয় দোকান মানুষের শারীরিক দুরত্ম কমিয়ে আনতে নগরীর ভিভিন্ন স্থানে খন্ড খন্ড স্থানে বসানোর ব্যবসা করা করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদ জানান, জনগণের চলাচল সীমিত করা এবং বড় বাজার গুলোর উপর চাপ কমানোর জন্য নগরীকে ৬টি জোনে ভাগ করা কবে। এই জোনগুলো হলো লালবাগ মোড়, সাতমাথা, সাহেবগঞ্জ, উত্তমসহ আরো বেশ কিছু এলাকা।

(এমএস/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২০)