পাবনা প্রতিনিধি : সারাদেশে ক্রমবদ্ধমান হারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যুর হার। অথচ চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সেবাদানকারীদের সংকট মুহুর্তে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি পাবনা কমিউনিটি হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেরস ডা. কাজী কামরুজ্জামান এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

প্রফেসর ডা. কাজী কামরুজ্জামান বলেন, দেশ করোনা দূর্যোগে সংকটময় সময় পার করছে। চিকিৎসক-নাসসহ চিকিৎসা সেবায় যারা নিয়োজিত রয়েছেন, তারাই মূলত সাহসী যোদ্ধা। এই ক্রান্তিকালে করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। করোনা চিকিৎসায় ভয় নয়, সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করতে হবে।

পাবনা কমিউনিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তাই দেশের এই কঠিন সময়ে ভয় পেয়ে পিছিয়ে নয়, সাহস নিয়ে সামনে এসে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্যই পাবনা কমিউনিটি হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, করোনা চিকিৎসার জন্য পাবনা কমিউনিটি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রক্রিয়া চলমান। ইতোমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই সংকটকালীন সময়ে অনেকেই যখন পিছিয়ে যাচ্ছে, সে সময়ে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাবনা কমিউনিটি হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়ায় এ জেলার করোনা আক্রান্ত রোগীসহ অন্য জেলার করোনা আক্রান্ত রোগীও চিকিৎসা সেবা পাবেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদার মনমানসিকতার কারণে তারা প্রশংসার দাবীদার বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল জানান, ইতোমধ্যে করোনা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফরকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি পর্যালোচনা করে অচিরেই করোনা হাসপাতালের কাজ শুরু করবে। সিভিল সার্জন আরও বলেন, ইতোমধ্যে ভেন্টিলেটর স্থাপনসহ করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য উন্নত প্রযুক্তি সংযোজন করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর বলেন, এই হাসপাতালের ২৫০ শয্যা থাকলেও বর্তমানে ১০০ শয্যা দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা প্রাথমিক অবস্থায় ১০০ শয্যা দিয়েই করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করবো। তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় করোনা প্রাথমিক স্তরের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। তবে পর্যায়ক্রমে গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্টাফ যারা আছেন, তাদের মধ্যে যারা আগ্রহী তারা সরকারের এই উদ্যোগের সাথে জড়িত হবেন।

পাবনা কমিউনিটি হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. তৌকির হাসান বলেন, এই হাসপাতালটি ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত। ২০১৮ সালে ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালটি ১০০ শয্যা নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করে।

বেসরকারি হাসপাতাল হলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে মাত্র ৩০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে রোগীরা নানা রোগের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। দেশে করোনা ভাইরাস দূর্যোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি করোনা রোগীদের চিকিসা সেবা প্রদানের জন্য সরকোরের সাথে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

(পিএস/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২০)