শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে থমকে গেছে উত্তরের শষ্যভান্ডার দিনাজপুরের কৃষি চিত্র। বড় ধরণের লোকসানের ঝুঁকিতে পড়েছে কৃষক। শ্রমিক সংকটের কারণে বোরো ফসলে সেচ ও পরিচর্য়া নিয়ে কৃষক বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে উৎপাদিত সব্জির বাজারজাতের সমস্যা ও দাম ভালো না পাওয়ায় ক্ষেতের সব্জি ক্ষেতেই বিনষ্ট হচ্ছে। 

দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহ এই বোরো ক্ষেত নিয়ে এখন বিপাকে কৃষক। না পারছে,সময় মতো ক্ষেতে সেচ দিতে, না পারছে পরিচর্য়া করতে।উঠতি এ বোরো ধান নিয়ে তারা চরম সমস্যায় পড়েছেন। ধার কর্জ করে জমিতে বোরো ধান লাগিয়ে, করোনার এই পাদূর্ভাবে তারা এখন সময় মতো, সেচ ও সার দিতে পারছেন না। শ্রমিকের অভাবে না পারছেন, ধান ক্ষেতের পরিচর্য়া করতে।

বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতোইল ইউনিয়নের চেংগন গ্রামের আদর্শ কৃষক মোঃ মতিউর রহমান জানান, ‘আর ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই বোরো ধান ঘরে উঠবে। এই সময় করোনার ভয়ে ঘরে বসে থাকলে চরম ক্ষতি হবে কৃষকের। ধান ঘরে উঠাতে না পারলে কৃষক পরিবারকে সারাবছর এর খেসারত দিতে হবে।

চিরিরবন্দর উপজেলার বিন্নাকুড়ি এলাকার কৃষক মেহেরুজ্জামান জানালেন, করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংকটে এখন অনেক কৃষক পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই বাধ্য হয়ে ফসল পরিচর্যায় মাঠে নেমেছেন। তবে, দূরত্ব বজায় রেখেই তারা মাঠে কাজ করছেন।

বিরল উপজেলা পুরিয়া গ্রামের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক মো.মতিউর রহমান জানিয়েছেন,তার বেশকিছু ক্ষেত জুড়ে এখন টমেটো, বেগুন, কাঁচামরিচ, ডাঁটা, ঢেঁড়শ, লালশাক ও শসা রয়েছে। এসব সবজি এখন তোলা ও বিক্রি নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন তিনি। একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে বাজারজাতের প্রতিবন্ধতা। তার পর দাম নেই আগের মতো। পানির দরে বিক্রি হচ্ছে সব্জি। এতে উৎপাদন খরচতো দুরের কথা উঠছেনা শ্রমিক মুজুরির খরচ। এমন অভিযোগ তার।

তবে, দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তোৗহিদুল ইকবাল জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিকে নজরদারিতে রয়েছে জেলার কৃষি সেক্টর। এ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে কৃষি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক। সার ও বীজের সঠিক মতো সরবরাহ না পাওয়ায় এবং শ্রমিক সংকটোর কারণে এবার কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকাই করছেন কৃষিবিদরা।

(এস/এসপি/এপ্রিল ৩০, ২০২০)