রণেশ মৈত্র


একটি অতিা পুরাতন প্রবাদ “সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ!” ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি কিন্তু এর মাহাত্ম্য এতদিনেও ঠিকমত বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কিন্তু আজ ১৮ এপ্রিলের দৈনিক জনকণ্ঠে ও বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত দুটি খবর ইন্টারনেটের কল্যাণে পড়তে নিয়ে প্রবাদটির প্রকৃত মাজেজা ও যথার্থ্য উপলব্ধি করলাম। বিশেষ করে গোটা পৃথিবী এবং আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে আমাদের বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ করোনা আতংকে বিহ্বল এবং হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছেন।

প্রিয় পাঠক-পাঠিকার কাছে ঐ খবর তিনটির সারাংশ তুলে ধরার লোভ তাই সামলাতে পারছি না।

“দেশে ৯০ জন চিকিৎসব করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত”-এই শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রচারিত খবরে বলা হয়, দেশে ৯০ জন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে নিবিড় পরিচর্য্যা কেন্দ্রে (আই.সি.ইউ) আছেন একজন। ডাঃ মো: মঈন উদ্দিন নামে চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া তিনজন সুস্থ হয়ে ছুটি পেয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৩ জন। বাকিরা নিজ নিজ বাড়ীতে আপইসোলেশনে আছেন।

বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশানের প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরূপম দাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীতে ৫০ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত। এর পর নারায়নগঞ্জে ১২ জন। ময়মনসিংহে সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন। গাজীপুরের কালিগঞ্জে ছয়জন। বাকীরা দেশের অন্যান্য জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে কোয়ারান্টাইনে আছেন প্রায় ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ডা. নিরূপম দাশ জানান, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউট (আই ই ডিসি আর) যদি আমাদের এ কাজে সহযোগতিা করতো, তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তো। আমরা নিজেদের উধ্যোগে কাজটা করছি। তাই প্রকৃত তথ্য উঠে আসছে না। খবরটি পরিবেশন করেছেন দৈনিক জনকণ্ঠের একজন ষ্টাফ রিপোর্টার।

“বিতর্কে স্বাস্থ্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী”

দ্বিতীয় খবরটি পড়লাম একই দিনের বাংলাদেশ প্রতিদিনে উপরোক্ত শিরোনামে। বিশালকায় প্রতিবেদনটিতে বলা হয় সরকারের দুই মন্ত্রীর ব্যর্থতায় করোনা পরিস্থিতি এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্য ও বাণিজ্য খাতে এখন ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থা।সব মহলে এখন উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। এই মন্ত্রীদের নিয়ে সমালোচনা অন্ত নেই। অভিযোগ উঠেছে, সারা দেশের সিভিল সার্জন ও সিনিয়র চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁরা পূরোপূরি ব্যর্থ হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। চীনের উহানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর যথেষ্ট সময় হাতে পেয়েও তাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

একইভাবে ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর তিনি গার্মেন্টস মালিকদের নিয়ে বৈঠক করলেও সঠিক কোন গাইড লাইনদিতে পারেন নি। ফলে, গনহারে গার্মেন্টস কারাখানা খুলে রাকা, সে কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের বাড়ী পাঠানো। আবার মালিকপক্ষগার্মেন্ট খুলে দিয়ে শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে ক্রমে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলেন। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস দ্রুত গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে বক্তব্য আসে। এসব কারণে বাণিজ্যমন্ত্রীকে তিরস্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয় করতে না পারায় ফলে গার্মেন্টস শিল্প কারখানাগুলিতে চরম বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। দুই মন্ত্রীর এমন ব্যর্থতার কারণেই দেশে করোনা ভাইরাসের ব্যাপকবিস্তার ঘটেছে, এমন মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টরা। তাদের এ ব্যর্থতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলিতেও চলছে তুমূল সমালোচনা।

করোনা ভাইরাসের তৃতীয় স্তরে রয়েছে বাংলাদেশ। সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মানুষ থেকে মানুষে। ইতোমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার ১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারা দেশকে করোনা ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণাও দিয়েছে। এখন সংক্রমণের সংখ্যাও যেমন প্রতিদিন বাড়ছে, তেমনি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের দিনগুলো কঠিন হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের জন্য।

এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে এখনই জরুরী ভিত্তিতে। অন্যথায় করোনা ভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী মহাবিপর্য্যয় আসতে পারে যা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। একইভাবে সিদ্ধান্তে আসা দরকার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীর ব্যাপারে। তাঁর দূরদর্শিতার অভাবে এবং গার্মেন্টস মালিকদের সাথে সমন্বয়ের অভাবে গার্মেন্ট কারখানাগুলো খোলা রাখা-না রাখা নিয়ে যে বিভ্রান্তি এবং শ্রমিকদের গ্রামে যাওয়া আবার ফিরে আসায় করোনা সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বাণিজ্য পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারা সহ কোন খাতেই সাফল্য দেখাতে পারেন নি। সার্বিক পরিস্থিতিে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রণালয় এখন তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন বাণিজ্যমন্ত্রীর যোগ্যতা এবং তাঁর ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে বহুদিন যাবত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল সাবেক উপাচার্য্য বলেন, “এটা সত্য যে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সারা বিশ্বের জন্যেই একটি নতুনঅভিজ্ঞতা। আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে এত বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন আছে। দরকার মন্ত্রণালয়গুলির সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বিত উদ্যোগ। এই ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ের ক্ষেত্রেই আমাদের মূল ঘাটতি।

বাংলা অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মন্ত্রীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা তো আছেই-বিতর্কও আছে। এ বিষয়গুলো রাজনৈতিক। এটা দেখার দায়িত্ব শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের। সিদ্ধান্তও সেখান থেকেই আসতে হবে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জামাল মহীউদ্দিন বলেছেন, “বি এন এ, স্বাধীনতায় চিকিৎসক পরিষদ প্রকৃতির সাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কোন সমন্বয় নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন একটা, স্বাস্থ্য সচিব বলেন আর একটা। আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডিজি বলেন ভিন্ন কথা। তাঁরা এক একজন এক এক কথা বলছেন। এখন এমন করার সময় নয়। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্বহীন ব্যক্তিরা দায়িত্বহীন কথাবার্তা বন্ধ করে করে সমন্বয় হীনতা দূর করতে একসঙ্গে বসে যৌথভাবে সকল কিছু করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিধ্যালয়ের উপাচার্য্যও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, “শুধু স্বাস্থ্যক্ষাত নয়, অন্য যে কোন ক্ষাতে যখন ক্রাইসিস দেখা দেবে,দেখা যাবে সেখানেই অদক্ষতা আছে। যেখানে যে যোগ্যতার লোক বসার কথা ছিল, সেখানে দেখা গেছে তার চেয়ে কম যোগ্য, বা অযোগ্য, কম মেধাবী লোক উচ্চ আসনে বসে আছেন। এসব লোক দিয়ে ক্রাইসিস সামাল দেওয়া অত্যন্ত দুরূহ। মন্ত্রী সচিবরা যে বলেন, আমরা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি, এগুলি আবেগীয় কথাবার্তা। বাস্তবতার সঙ্গে কোন মিল নেই।

সাহস করে সত্যি কথাটা বলেন

ঢাকা বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে নারায়নগঞ্জের ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক জানালেন, ওনার হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সহ ১৬ জন আক্রান্ত। তার মধ্যে ঐ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কও রয়েছেন। উনি আক্রান্তের কারণ হিসেবে বলেন, উনারা কোন এন-৯৫ মাস্ক পান নি। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বলা হলো, উনারা কাছাকাছি মানের মাস্ক সংগ্রহ করেছেন সামনের সপ্তাহেআরও করবেন। প্রধানমন্ত্রীর মাস্ক সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে একজনের কথার মাঝখানে ডি জি হেলথ মাইক কেড়ে নিয়ে বললেন, উনারা চাহিদা জানালে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।

প্রধানমন্তহ্রী ঘোর বিস্ময় নিয়ে বললেন, নারায়গঞ্জে রিসার্চ বেইজড কিছু নেই? একটা ল্যাব করার মত উপযুক্ত কোন প্রতিষ্ঠান নেই? ঢাকার এত কাছে! তার মানে কি এরা এতদিন ঢাকার উপর নির্ভর করে চলছে? নারায়নগঞ্জের জন্য ডেডিকেটেড টেষ্টের কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। দিনে একবার নয়। একের অধিকবার স্যাম্পল পাঠাতে বললেন। অথচ এরা এতদিন বলে আসছে সব ধরণের প্রস্তুতি আছে। এটা প্রধান মন্ত্রীকে কতটা অন্থকারে রেখে কাজ করে তা দিব্যি জানা গেল।

গোপালগঞ্জের ডিসি প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, কোথাও পরিবারগুলোর পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই। ওনারা এই অবস্থায় কাজ করছেন। এজন্য সবার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছাতে দেরী হচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ চলে গেলেও এখনও কোথাও কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। যে জেলায় বা উপজেলায়ই প্রশ্ন করা হয় সবার একই উত্তর-এটা নিয়েই কাজ চলছে। তাহলে প্রশ্নকরা যায় নিশ্চয়ই, দেশটা অনেক আগেই তো ডিজিট্যাল হয়ে গেছে। তাহলে ডিজিট্যাল কেন সব নাগরিকের তথ্য নেই। এই খাতে যে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, সেগুলি তা হলে কোথায় গেল?

করোনা রোগীদের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সদস্যদের কোয়ারান্টাইন কিংবা অবস্থানের জন্য বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ তথ্য ১৪ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেলো, কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালে সেবাদানকারী ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের অবস্থান বা কোয়ারান্টাইনে থাকার জন্য প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও সহ রাজধানীর ২০টি হোটেলের ব্যবস্থা করেছে সরকার।

অদ্ভুত ব্যাপার হলো প্রস্তাবিত তালিকায় থাকা হোটেলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না এবং তাদের সঙ্গে কেউ এ বিষয়ে আলোচনা করে নি। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেনআমরা শুধ হোটেল গুলোর নাম প্রস্তাব করেছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পূরো বিষয়টি পর্য্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। এটা চূড়ান্ত তারিকা নয়। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না।মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কে বলতে পারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, হোটেলগুলো এখনও রিকুইজিশন করা হয় নি। হোটেলগুলোর সঙ্গে কথাবলেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিশ্চয়, স্বাস্থ্য অধিফতর হোটলগুলির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।

যখন বলা হয় স্বাস্থ্য অধিফতর লেছে, এটা মন্ত্রণালয় দেখবে এবং সিদ্ধান্ত নেবে তখন তিনি বলেন, সম্প্রতি একজন কর্মকর্তাকে এ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।” ঐ কর্মকর্তার নাম জানতে চাইলে তিনি বললেন, “এই মুহুর্তে ঐ কর্মকর্তার নাম মনে করতে পারছি না।”

অথচ গণমাধ্যম থেকে মানুষ জানছে যে ডাক্তার-নার্সদের জন্য চার তারকা পাঁচ তারকা মানের হোটেল বরাদ্দ করা হয়েছে তখন প্রকৃত বাস্তবতা হলো ডাক্তার-নার্সরা তিনবেলা ঠিকমত খাবারই পাচ্ছেন না। কোন কোন বাড়ীওয়ালা তাদেরকে বাড়ী ছাড়ার নোটিশও দিয়েছে। দায়িত্বহীনতার শেষ কোথায়?

এভাবেই প্রশাসন সত্য গোপন করে চলেছেন-আপর মরছেন রোগী, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রয়োজন মৌলবাদ বিরোধী লড়াই । বাংলাদেশ নয় শুধু, সারা পৃথিবীর সংবাদপত্র-টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার এক মৌলবাদী নেতার মৃত্যুতে লক্ষাধিক লোকের জানাযা আয়েঅজনের ছবি। ঐ জানাযার মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা কোন প্রকার রাজনৈতিক, সামাজিক বা ধর্মীয় সমাবেশ আয়েঅজনের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখানোর মত ধৃষ্টতা দেখানো হলো।

আর পরিণতিতে ক্লোজকরা হলো স্থানীয় নীচু স্তরের কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব,আই জি ডি. আই.জি, সংশ্লিষ্ট ডিসি, এস পি সিভিল সার্জন পার পেয়ে যাবেন? অজশ্র মানুষের মৃত্যুর আশংকা যাকে আমরা “খুনের প্রচেষ্টা” বলতে পারি তার দায় ওঁরা এভাবে পাবেন?

মৌলবাদ বিরোধী লড়াই ও করোনা বিরোধী লড়াই আজ আর বিচ্ছিন্ন নয়-একাকার হয়ে গেছে। এটা না বুঝলে গণমৃত্যুর আশংকা সত্য হতে পারে। জানাযার আয়েঅজকদের গ্রেফতারই বা কেন করা হবে না?

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত।