স্টাফ রিপোর্টার : রংপুর মঙ্গাপীড়িত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সচ্ছল পরিবার ও প্রশাসনের উদ্দেশে বলেছেন, রংপুরে যেন মঙ্গা ফিরে না আসে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

সোমবার রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রংপুরকে আমি বিশেষভাবে বলে যাচ্ছি, যেহেতু এটা একটি মঙ্গাপীড়িত এলাকা ছিল, এখানে যারা একটু সচ্ছল পরিবার আছেন বা আমাদের যারা প্রশাসন সকলকে আমি অনুরোধ করবো- এই এলাকায় যেন আবার মঙ্গা ফিরে না আসে। সে দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

এ সময় হোটেল বন্ধ থাকার কারণে দুধ উৎপাদনকারীরা সমস্যায় পড়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মিষ্টির দোকান খুলে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুধ থেকে ঘি তৈরি করা... প্রত্যেকটা ডিসির হাতে আমরা টাকা দিয়েছি ত্রাণের জন্য। তাছাড়া যারা ত্রাণ দেবেন কিছু দুধ কিনে বাচ্চাদের দিতে পারেন। পাশাপাশি গুঁড়া দুধ তৈরি করা, ঘি তৈরি করা যেগুলো দীর্ঘদিন থাকবে সে ব্যবস্থাও নিতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিখাতে আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সেখানে ডেইরি ফার্ম, পোল্ট্রি ফার্ম থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র, মাঝারি কৃষক যারা মৎস্য চাষ করেন প্রত্যেকে যেন কিছু সুযোগ পান সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ধান আমরা সংগ্রহ করবো। এর মধ্যে দুই লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ, ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ প্রায় ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আমরা সংগ্রহ করবো। আশাকরি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের খাবারের সমস্যা হবে না। আউশ, আমন, তাছাড় অন্যান্য ফসল আসবে। কাজেই বাংলাদেশ খাদ্যের অভাব যেন আর না হয়, সেটা দেখতে হবে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি লক্ষ্য নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতি থমকে দাঁড়িয়েছে। আমি জানি এটার প্রভাব পড়বে আগামীতেও। আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পরিস্থিতিকে মহামারি ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছিলাম জাতি এর সুফল পেতে শুরু করেছিল হঠাৎ করে আঘাত আসলো। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বে যেহেতু এটা এসেছে স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সমস্যা আসবেই, আর তা মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করি। আমরা মনুষ্যসৃষ্ট সেই অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি। কাজেই এই করোনাভাইরাস দুর্যোগও আমরা ইনশাআল্লাহ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো। এটা আমরা বিশ্বাস করি।

এদিনে তিনি দেশবাসীকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পবিত্র রমজান মাসে এবার একটু ভিন্নভাবে পালন হচ্ছে। কেন এভাবে পালিত হচ্ছে তা আপনারা সবাই জানেন। করোনাভাইরাস আমাদের মাঝে মহাবিপর্যয় হিসেবে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আপনারা আমার শহীদ বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করবেন। এছাড়া আমি দেশবাসীকে আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

(ওএস/এসপি/মে ০৪, ২০২০)