নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক যুবক মুসলমান এক গৃহবধূর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকাবস্থায় বেরসিক জনতা তাদের হাতে নাতে আটক করে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাতে উপজেলার মাইলজানী গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর এলাকার মাতাব্বররা তড়িঘরি করে গ্রাম্য সালিশে ওই লম্পটকে চর থাপ্পর দিয়ে ছেড়ে দেয়। অপর দিকে এক সন্তানের জননী গৃহবধুকে ওই দিনই গ্রাম ছাড়া করেছে স্থানীয় মাতাব্বররা। এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ভাইরাল হলে ব্যাপক তোলপার শুরু হয়।

জানা যায়, মাইলজানী গ্রামের অটো চালক মো. শাহিদুল ইসলামের স্ত্রী’র (৩৫) সাথে সহবতপুর গ্রামের শীতল সাহার ছেলে দীপক সাহার দীর্ঘদিন ধরে অসম পরকিয়া প্রেম চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার ভোর রাত ২ টার দিকে শাহিদুল অটো নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বরংগাইল চলে যান । এ সুযোগে প্রেমিক দীপক সাহা শাহিদুলের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে অভিসারে মত্ত হয় । এসময় এলাকার লোকজন টের পেয়ে তাদেরকে আটক করে। আটকের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌছে দীপককে চর থাপ্পর দিয়ে ছেড়ে দেয়।

গৃহবধূর স্বামী শহিদুল জানান, ঘটনার দিন বিকেলে ফজলুর রহমান জালু খানের বাড়ীতে এক সালিশ বসে। সালিশে মাতাব্বররা তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রাম ছাড়ার রায় দেন। রায় ঘোষনার পর থেকে গৃহবধুকে তার স্বামী অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। সেই সাথে ৭ দিনের মধ্যে তার অটো ভাড়া দিয়ে সেও (স্বামী) অন্যত্র চলে যাবে বলে এ প্রতিনিধিকে জানান গৃহবধুর স্বামী শহিদুল ইসলাম।

গ্রাম্য মাতাব্বর শহিদুল এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গৃহবধূকে গ্রাম ছাড়ার পক্ষে আমি ছিলাম না। অনৈতিক কাজের শাস্তি চর থাপ্পর কিনা জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আশেক আলী বলেন, আমি কোন শাস্তি দেই নাই। তবে সবার উপস্থিতিতে ছেলেকে তার পিতা মাতার জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে দীপক সাহা পলাতক রয়েছে। অন্যদিকে মাতাব্বররা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় গৃহবধুর স্বামী মামলা করতে সাহস পাচ্ছেনা বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ তোলেন।

নাগরপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আলম চাঁদ বলেন, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে কাউকে গ্রাম থেকে বিতারিত করার অধিকার কেউ রাখে না বলেও তিনি (ওসি) জানান।

(আরএস/এসপি/মে ১০, ২০২০)