স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আইনজীবীকে দণ্ড দেয়ার ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করার জন্যে একটি উচ্চতর কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। একই সঙ্গে, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হুদা ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনার আর্জি জানানো হয়েছে।

জনস্বার্থে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ই-মেইলের মাধ্যমে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া। পরে আইনজীবী নিজেই রিট করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রিটে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র, সংস্থাপন ও জনপ্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, টিসিভি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, বরিশালের জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হুদাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত গত ২ মে বরিশালে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে বাধা দেয়া ও ট্যাগ অফিসারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এক আইনজীবীকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হুদা। দণ্ডপ্রাপ্তের নাম অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রিপন। তিনি নগরীর ডেফুলিয়া এলাকার বাসিন্দা।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, টিসিবির এক ডিলার ট্রাকে করে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করছিলেন। তখন রবিউল ইসলাম রিপন নামে এক ব্যক্তি টিসিবির বিরুদ্ধে অকারণে নানা অভিযোগ করেন। বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিসিবির কর্মকর্তাকে জানাচ্ছিলেন। তখন তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন অভিযুক্ত রিপন।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত সরকারি কাজে বাধা দেয়া এবং সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার দায়ে রিপনকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন।

রিটকারী আইনজীবী বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জানতে পারি তিনি বরিশাল আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রিপন। যাকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৭ দিনের সাজা দেন। পরে প্রকাশ্যে হাতকড়া পড়িয়ে অসম্মানজনকভাবে একজন আইনজীবীকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেয়া সাজা মোবাইল কোর্ট আইন অনুয়ায়ী হয়নি। ওই আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রিপনকে সাজা প্রদান করা হয়েছে; যা সংবিধান পরিপন্থী। যেখানে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। মামলা না করে সাজা দিয়েছেন এটা অবৈধ।

(ওএস/এসপি/মে ১৪, ২০২০)