মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখরের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হট লাইন সার্ভিসের মাধ্যমে গত দেড় মাসে ৩ হাজার হত দরিদ্র কর্মহীন মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌছেছে। মাগুরা জেলা যুবলীগ এ হট লাইন সার্ভিসটি পরিচালনা করছে। খাদ্যের প্রয়োজনে দিন-রাতে যে কোন সময় যে কেউ ফোন দিলে দ্রুততার সাথে তার বাড়িতে খাবার পৌছে দিচ্ছে যুবলীগ কর্মীরা। 

এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুর রহমান জানান, মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও সদিচ্ছায় এই হট লাইন সার্ভিসটি ১ এপ্রিল থেকে চালু হয়েছে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা হট লাইন সার্ভিসে বিভিন্ন মানুষের ক্ষুদে বার্তা ও ফোন কলের ভিত্তিতে দ্রুততার সাথে তার কাছে খাবার পৌছে দিচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এ কার্যক্রম।

এ জন্যে মাগুরা শহরের কলেজ রোডে সমাজ কল্যাণ সংসদ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দপ্তরে যুবলীগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করা হয়েছে। সেখানে হট লাইন সার্ভিসে সেবা দেয়ার জন্যে কাজ করছে ১৫ জন সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক। হট লাইন সার্ভিসের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, তেল, ডাল, আলু, ও সাবান।

ফজলুর রহমান আরো বলেন,‘ সাইফুজ্জামান শিখর এমপি সার্বক্ষণিকভাবে এ কার্যক্রমটি তদারক করছেন। হট লাইন সার্ভিসে হতদরিদ্র মানুষের পাশাপাশি নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার খাদ্য সহায়তা নিয়েছেন। দিন রাতের যে কোন সময় ফোন দিলে আমরা দ্রুততার সাথে খাবার পৌছে দিয়েছি। পারিবারিক এই খাদ্য সহায়তার মধ্যে কিছু শিশু খাদ্য রয়েছে। এমনো দেখা গেছে, ঘরে একেবারেই খাবার নেই সেই পরিস্থিতিতে আমাদের হট লাইনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা নিয়ে কোন কোন পরিবার তাদের দৈনন্দিন খাদ্যের চাহিদা মিটিয়েছেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা অব্যাহত থাকবে’।

গোয়ালখালী গ্রামের জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ্য পরিবারে একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। মাটি কাটা শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় প্রায় অনাহারে দিন কাটছিল। একজন আমাকে হট লাইনের একটি নম্বর দিয়ে বললো এই নম্বরে ফোন দিলে তোমাকে খাবার পৌছে দেবে। প্রথমে বিশ্বাস করিনি। অবিশ্বাসের পরই ফোন দিই এবং সর্বোচ্চ ১ ঘন্টার মধ্যে আমার বাড়িতে এসে খাবার দিয়ে গেছে’।

যুবলীগ কর্মী স্বেচ্ছাসেবক মিশর জানান, একদিন রাত ১০টার দিকে দেখি ফজলু ভাই ফোনে কথা বলতে বলতে চোখ টলটল করছে। বললাম ভাই কি হয়েছে? বললো এইমাত্র একজন ফোন দিয়ে বললো প্রায় ২ দিন বাচ্চাদের নিয়ে অনাহারে আছি। এই মুহুর্তে যদি কোন খাবারের ব্যবস্থা না করতে পরি তাহলে ছোট বাচ্চারা না খেয়ে মারা যাবে। আমাদের জন্য কোন খাবারের ব্যবস্থা করা যায় কিনা। তুমি যতদ্রুত পার এদের খাবার পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা কর। আমি নিজে গিয়ে তাদের খাবার পৌছে দিয়ে আসি।

হট লাইনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কর্মরত যুবলীগ কর্মী ফরিদ হোসেন জানান, যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ সহজে নিজেদের অভাব অনটনের কথা কাউকে বলতে পারেনা। তারা বেশির ভাগ রাতে হট লাইন নম্বরে ফোন দেয়। এসব মানুষের কাছে খাবার পৌছে দিতেই কৃতজ্ঞতায় দু’চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দেন। এ কাজে অনেক ঝুঁকি থাকলেও মানুষের জন্য কিছু করা যায় এ জন্যই আমি কাজটি হাসিমুখে করি।

(ডিসি/এসপি/মে ১৫, ২০২০)