স্টাফ রিপোর্টার : করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যু নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ অভিযোগ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য লুকোচুরির কাল্পনিক উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে ঢালাওভাবে বলা হচ্ছে, সবাই করোনায় মৃত্যু। প্রকৃতপক্ষে মৃত্যুর পরে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে পজেটিভ-নেগেটিভ দুটোই আসছে। মৃত্যুর পর যে পরীক্ষা করা হচ্ছে, দেখে শুনে করা হচ্ছে। অনেকের নানা শারীরিক জটিলতায় স্বাভাবিক মৃত্যুও হচ্ছে। এসকল মৃত্যু নিয়েও মিথ্যাচার করা হচ্ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রচারের অভিযোগের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে টুইস্ট করে অপপ্রচারমূলক গুজব রটনা করে যাচ্ছে। অপরাধমূলক কাজে যারা উস্কানি দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইনের জাতীয় অপপ্রয়োগ না হয়, সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। আমি আবারও বলছি, এক্ষেত্রে যদি কোথাও কোনো আইনের ব্যত্যয় বা অপপ্রয়োগ ঘটে তাহলে তাকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে জানানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমি সংক্ষুব্ধদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যদি কাউকে অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হয় এটা যেন অবগত করার বিষয়ে সচেতন থাকেন।’

সরকারের ত্রাণ তৎপরতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) ইতিমধ্যে এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এছাড়া এক কোটি মানুষের রেশন কার্ড করা হয়েছে। ৫০ লাখ মানুষের মাঝে নগদ সহায়তা কর্মসূচি চালু হয়েছে। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে।’

মন্ত্রী জানান, ‘সংকট উত্তরণে বিভিন্ন খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসহ আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকট উত্তরণ ও পরবর্তী অর্থনীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পাচ্ছেন। তার এই প্রণোদনা অর্থনীতির জন্য পর্যায়ক্রমে রোডম্যাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট সংকটে ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা ও দক্ষতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা ৭৫ পরবর্তী ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

এ সময় তিনি জাতীয় অধ্যাপক অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তার মৃত্যুতে জাতির চেতনা জগতে শূন্যতা তৈরি হলো। তার বিদায় আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি মূল্যবোধের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি। সাহিত্য সংস্কৃতির এ বটবৃক্ষ দেশের স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও জাতীয় আন্দোলনে রেখেছে অনন্য অবদান। চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবনের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছিলেন মানবিকতা ও সৃজনশীলতার বাতিঘর।’

পরে ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঝে প্রতিনিধির মাধ্যমে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য একেএম রহমত উল্লাহ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা ও উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/মে ১৫, ২০২০)