স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পর্যাপ্ত দক্ষতা সম্পন্ন গবেষক, ১০টিরও অধিক উন্নতমানের ল্যাব ও দুটি রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিনসহ ১৩টি পিসিআর মেশিন রয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও দক্ষ লোকবল থাকা স্বত্ত্বেও করোনাভাইরাস পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। করোনার এই মহামারিতে দেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদ্যাপীঠের গবেষক ও অবকাঠামো কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না? এমন প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীসহ অনেকেই।

তবে শিক্ষকরা বলছেন, রাজশাহীতে সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় করোনা শনাক্তকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ছে না। প্রয়োজন হলে সব ধরনের সহযোগিতা দিকে প্রস্তুত আছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলকিজ্যাল সায়েন্স ও ফলিত রসায়ন বিভাগে দুটি রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন রয়েছে। এছাড়াও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগেও কয়েকটি পিসিআর মেশিন আছে।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বনাথ শিকদার বলেন, আমার তত্ত্বাবধানে চারটি পিসিআর মেশিন থাকলেও তা কিউ পিসিআর বা আরটি পিসিআর নয়। আমাদের কাছে থাকা পিসিআর মেশিন দিয়েও ভাইরাস পরীক্ষা করা সম্ভব। তবে তা থেকে ফলাফল পেতে কিউ পিসিআর বা আরটি পিসিআর মেশিন থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় লাগবে। তবে প্রযুক্তি না থাকলেও আমাদের বিভাগে বেশ কয়েকজন আরটি পিসিআর বা কিউ পিসিআর মেশিন পরিচালনায় দক্ষ শিক্ষক রয়েছেন যারা করোনা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগে চারটি পিসিআর মেশিন থাকলেও সেগুলো আরটি পিসিআর নয় বলে জানান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল হোসেন। তবে করোনা পরীক্ষায় তার বিভাগ সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, করোনা পরীক্ষায় বিভাগের স্নাতকোত্তর এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা ভূমিকা রাখতে পারবেন। তাছাড়া, বিভাগের শিক্ষকরা করোনা পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।

ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মাদ তৌফিক আলম করোনা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। রাজশাহীতে তুলনামূলকভাবে করোনা সংক্রমণের হার কম হওয়ায় এখনও আমাদের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ছে না। তাছাড়া, করোনা শনাক্তকরণের এ কাজগুলো বায়োসেফটি লেভেল ৩ বা ৪ এ সম্পন্ন করতে হয়, যার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। ডিজিএফআই এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। তবে প্রয়োজন পড়লে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক মোহাম্মাদ তৌফিক আলম আরও বলেন, ক্যাম্পাসে রোগটি টেনে না নিয়ে আসার জন্য হয়তো অনেকে করোনা পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলো বায়োসেফটি লেভেল ২ এ কাজ করার উপযোগী। সংক্রামক রোগগুলো নিয়ে কাজ করতে গেলে ল্যাবের সক্ষমতা বায়োসেফটি লেভেল-৩ এ উন্নীত করা প্রয়োজন। তবে ল্যাবগুলোর ডেকোরেশেনে হালকা পরিবর্তন এনে তা সহজেই করা সম্ভব।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিভাগে করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এ দুটি ল্যাবেই এ অঞ্চলের মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/মে ১৬, ২০২০)