স্টাফ রিপোর্টার : ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ৫১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের জন্য ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

তিনি বলেন, আগামীকাল সকাল থেকে মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজ শুরু হবে।

সোমবার (১৮ মে) ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি বিষয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে মংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজকে সন্ধ্যার পর এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ ধারণ করবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জনকে আশ্রয় দেয়ার মতো আমাদের সক্ষমতা রয়েছে।’

‘এখন করোনা সংক্রমণের সময়, তাই প্রত্যেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বলেছি। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন তাদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) ভলান্টিয়ারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা যেন আগামীকাল সকাল থেকে সকলকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কাজ করেন। এ কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করবে।

মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতের মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সোমবার দুপুর পর্যন্ত দুই হাজার ৫৬০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘একটি মানুষকেও যাতে প্রাণ হারাতে না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। যেসব মানুষ ঝুঁকিতে আছেন মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে। অন্য যে কোনো দুর্যোগের থেকে এবার সব থেকে বেশি সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নেবেন তাদের জন্য তিন হাজার ১০০ টন চাল, ৫০ লাখ নগদ টাকা, শিশু খাদ্য কিনতে ৩১ লাখ টাকা, গোখাদ্য কিনতে ২৮ লাখ টাকা এবং চার হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানান এনামুর রহমান।

সিভিল সার্জনদের নেতেৃত্বে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধসহ ওইসব টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এলজিইডিকে বলা হয়েছে, যেসব অঞ্চলের লোকজনদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে সেসব অঞ্চলের সড়ক এবং ব্রিজে কোনো সমস্যা হলে জরুরিভত্তিতে তা মেরামত করতে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কোনো বাঁধ ভেঙে গেলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে তা নির্মাণ করবে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।

(ওএস/এসপি/মে ১৮, ২০২০)