স্টাফ রিপোর্টার : ফার্মের মুরগির অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর এখন দাম বাড়তে শুরু করেছে ডিমের। দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ২৫ টাকা। এর সঙ্গে ঈদ সামনে রেখে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও আদার।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফার্মে মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে কয়েকদিন ধরেই অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছে বয়লার মুরগির। তাছাড়া রোজায় ডিমের চাহিদা কম থাকে। এখন রোজা শেষ হয়ে যাচ্ছে, ফলে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাছাড়া ঈদের বাড়তি চাহিদাও রয়েছে। সব মিলিয়ে ডিমের দাম বেড়ে গেছে।

শনিবার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্চে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। এ হিসাবে ডজনে ২৫ টাকা এবং পিসে দুই টাকার ওপরে বেড়েছে ডিমের দাম।

ডিমের এই দাম বাড়ার বিষয়ে মালিবাগে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জহাঙ্গীর বলেন, পাইকারিতে এক’শ ডিমের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। সে হিসাবে আমরা ডিমের দাম খুব একটা বাড়াইনি। বৃহস্পতিবার ৭৫ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করেছি। এখন ১০০ টাকা ডজন বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, রোজায় ডিমের চাহিদা কম থাকে। এ কারণে বিক্রও বেশ কম ছিল। একদিন পরেই রোজা শেষ হয়ে যাবে। এখন ঈদ কেন্দ্রিক ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাছাড়া শুনছি, ফার্মে মুরগির উৎপাদন কম। যে কারণে ডিম উৎপাদন কম হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে ডিমের এই দাম বেড়ে গেছে।

রামপুরার মুদি দোকানি মো. শামছু বলেন, রোজ শেষ হতে না হতেই ডিমের দাম বেড়ে গেছে। গতকাল (শুক্রবার) যে ডিম দিয়ে গেছে, তাতে প্রতি পিসের দাম দুই টাকা বেশি পড়েছে। আগে আমরা এক পিস ডিম ৭ টাকা বিক্রি করতাম, এখন ৯ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। রোজা শেষে ডিমের চাহিদা আরও বাড়বে। তাতে আমাদের ধারণা, সামনে ডিমের দাম আরও বেড়ে যাবে।

এদিকে ডিমের পাশাপাশি ঈদ সামনে রেখে গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও আদার দাম বেড়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে আদার দাম ২৪ থেকে ২৯ শতাংশ বেড়েছে। রসুনের দামও ২৪ থেকে ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া পেঁয়াজের দাম ৬ থেকে ১২ শতাংশ এবং আলুর দাম ১৮ শতাংশ বেড়েছে।

ঈদের আগে পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও আদার দাম বাড়ার তথ্য দিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। এক সপ্তাহ আগে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। দেশি রসুনের দাম বেড়ে হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আমদানি করা রসুনের কেজি বেড়ে হয়েছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

আলুর দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। দেশি আদার দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। আর আমদানি করা আদার কেজি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলামিন হোসেন বলেন, ঈদের কারণে পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও আদার চাহিদা বেড়েছে। রোজার শুরুতে বেশিরভাগ ক্রেতা এই পণ্যগুলো বেশি পরিমাণে কেনার কারণে রোজায় চাহিদা কমে যায়। যে কারণে রোজায় সবগুলোর দাম কমে। এখন অনেকের মজুত ফুরিয়ে গেছে, সেই সঙ্গে ঈদের চাহিদা যুক্ত হয়েছে। ফলে দাম বেড়ে গেছে। আমাদের ধারণা, ঈদের পর আবার এসব পণ্যের দাম কিছুটা কমে যাবে।

(ওএস/এসপি/মে ২৩, ২০২০)