স্টাফ রিপোর্টার : করোনা মহামারি প্রতিরোধে সরকারের কর্মকাণ্ডে কোনো সমন্বয় নেই, তারা ব্যর্থ- এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঈদের নামাজ শেষে সকালে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

সোমবার বেলা ১১টায় মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শেরে বাংলানগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে যান। তারা কবরের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ করে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবসময় ঈদের দিন দলীয় কর্মসূচি শেষ করে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় সাজা নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রতি ঈদে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবর জিয়ারত করে আসছেন।

ফখরুল বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় সরকারের তরফ থেকে যে সমস্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আমাদের কাছে মনে হয়েছে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, সমন্বয় ছিলো না এবং এখনো নেই।”

তিনি বলেন, আমরা এই কথা বলি না যে, এটা তারা পুরোটাই পারবেন। কারণ পুরোটা পারা সম্ভব নয়, নতুন একটা জিনিস। কিন্তু যে ইচ্ছ, যে প্রচেষ্টা, সকলকে আপনার সাথে নিয়ে বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ যারা তাদেরকে সাথে নিয়ে এইটাকে মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।”

সরকারের ব্যর্থতার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, কয়েকবার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে সারাদেশেই মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আপনারা দেখলেন এবার ঈদের আগে এবং তারও আগে গার্মেন্টসসহ ছুটি- সব মিলিয়ে এখন সারাদেশের মানুষই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে প্রায়।

বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিতসা হচ্ছে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে দেখুন- এখন যারা দায়িত্বপূর্ণ লোক আছেন, গুরুত্বপূর্ণ লোক আছেন তারা কিন্তু অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে... যেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে করোনাভাইরাসের হাসপাতাল হিসেবে... সেখানে তারা যাচ্ছেন না। তারা যাচ্ছেন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।”

তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি যে, এটা প্রমাণ করে সিভিল হেলথ ব্যবস্থা অর্থাত বেসামরিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙেই পড়েছে। যার কারণে কারো আস্থা সেখানে থাকছে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসে লকডাউন করা হয় নাই কিন্তু ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে মানুষ আসলে সাধারণ ছুটি ভোগ করছে আমরা যা দেখতে পারছি চতুর্দিকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সরকার এই বিষয়টাতে যে ধরনের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিল.. তা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।”

ফখরুল আরেও বলেন, ‘‘কোথাও কোনো দায়িত্বের লেশ আমরা দেখতে পারছি না, সমন্বয় দেখতে পারছি না। একটা যে সেন্স অব রেসপনসেবিলিটি সেটা দেখতে পারছি না। আপনি পুরোটাই পারবেন-সেটা সম্ভব না এখন। কিন্তু আপনি করার চেষ্টা করছেন আন্তরিকভাবে... সেটা ভিজিবল হতে হবে, সেটাই আমরা দেখছি না।”

মহাসচিব ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ছিলেন।

(ওএস/এসপি/মে ২৫, ২০২০)