আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদার ও আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইন চার্জ মো. আফজাল হাসেন মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের জানান, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের থানেশ্বরকাঠী গ্রামের সুমন বৈদ্য'র মেয়ে মুক্তি রানী বৈদ্য (১৮) এর সাথে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে পার্শ্ববর্তী রত্নপুর গ্রামের খোকন সমদ্দারের ছেলে মিঠুন সমদ্দার দশ মাস নিজেদের সম্মতিতে বিয়ে করে।

পরবর্তীতে মেয়ের বাবা সামাজিকভাবে ছেলের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুক্তিকে শশুর বাড়িতে তুলে দেন। বিয়ের পর থেকেই মুক্তি শ্বশুরবাড়িতেই অবস্থান করে আসছিল।

মিঠুনের বাবা-মা মুক্তিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে না পারায় বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই পুত্রবধুর কাছে মোটা অংকের টাকা ছেলে মিঠুরে ব্যবসার জন্য যৌতুক দাবি করে আসছিলো।

মুক্তির দিন মজুর বাবার পক্ষে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা প্রদানে অক্ষম হওয়ায় প্রায়ই মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো স্বামী মিঠুন, শ্বশুর খোকন ও শ্বাশুরী রীনা সমদ্দার।

মুক্তির বাবা সুমন বৈদ্য অভিযোগে বলেন, যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ঈদের দিন সোমবার সন্ধ্যার পরে তার মেয়ে মুক্তিকে মারধর করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে তার মেয়ে জামাতা মিঠুন, তার বাবা খোকন ও মা রীনা সমদ্দার। হত্যার পর মুক্তির লাশ একটি গামছা দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে পরে নামিয়ে ফেলে। মুক্তির মৃত্যুর কোন খবরও তাদের জানায়নি তারা। লোকমুখে খবর পেয়ে বিষয়টি থানাকে জানালে পুলিশের এসআই শাজাহান ও এসআই আব্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই মুক্তির লাশ উদ্ধার করে কৌশলে তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুরীকে থানায় নিয়ে আসেন।

এ ঘটনায় মুক্তির বাবা সুমন বৈদ্য বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে মেয়ে জামাতা মিঠুন, তার বাবা খোকন ও মা রীনা সমদ্দারকে অভিযুক্ত করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, নং-১৭ (২৬.৫.২০)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম নিহত মুক্তির লাশ পোষ্ট মর্টেমের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ ও অভিযুক্ত বাবা. মা ও ছেলেকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছেন।

(টিবি/এসপি/মে ২৬, ২০২০)