বিশেষ প্রতিবেদক, দিনাজপুর : বিষাক্ত মাদক রেক্টিফাইট স্পিরিট পানে ৯ জনের মৃত্যুর পর দিনাজপুর প্রশাসনের টনক নড়েছে। বিরামপুরে উপজেলার এক হেমিও চিকিৎসালয় থেকে ৪ হাজার ১’শ ৪ বোতল রেক্টিফাইট স্পিরিট (অ্যালকোহল) উদ্ধার করা হয়েছে। হোমিও চিকিৎসার আড়ালে বিষাক্ত মাদক বিক্রির অভিযোগ রয়েছে এসব হোমিও চিকিৎসালয়গুলোর বিরুদ্ধে।

আর বিষাক্ত সেই কথিত মাদক রেক্টিফাইট স্পিরিট পান করে বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীসহ এক উপজেলাতেই মৃত্যু হয়েছে, ৯ জনের। এঘটনায় ওই দিনেই এক কথিত হোমিও চিকিৎসক আব্দুল মান্নানকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজিউল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান ও বিরামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী মিথুন সরকার এই অভিযান পরিচালনা করেন। এ ঘটনায় সরকার হোমিও এর সত্বাধিকারী ডা.আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিরামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দিনাজপুর কার্যালয়ের পরিদশর্ক লোকমান হোসেন জানান, বিরামপুরে বেশ কিছু হোমিও চিকিৎসালয়ে অবৈধ্যভাবে রেক্টিফাইট স্পিরিট (অ্যালকোহল) বিক্রয় হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সরকার হোমিও চিকিৎসালয়ে একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় ওই চিকিৎসালয় থেকে ১৯ টি কার্টুনে ৪ হাজার ১শ ৪টি রেক্টিফাইট স্পিরিট’র বোতল উদ্ধার করা হয়।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, উপজেলায় যুবকরা রেক্টিফাইট স্পিরিট জাতীয় (অ্যালকোহল) খেয়ে নেশা জড়িয়ে যাচ্ছিল এমন অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই রেক্টিফাইট বোতলগুলো জব্দকরা হয়। এছাড়াও উপজেলায় কোন হোমিও চিকিৎসালয়ে নিময় বর্হিভুত ভাবে কেউ যেন এর অপব্যবহার করতে না পারে সে জন্য সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার সকাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিরামপুর পৌর শহর মাহমুদপুর,ইসলাম পাড়া ও হঠাৎপাড়া গ্রামে বিষাক্ত রেক্টিফাইট স্পিরিট পান করে স্বামী-স্ত্রীসহ ৯ জন মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় পল্লী হোমিও হল এর সত্ত্বাধিকারী ডা.আব্দুল মান্নানকে আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে বেশ কয়েক জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়েরও করেছে পুলিশ।

মৃতরা হলেন, পৌরশহরের ৬নং ওয়ার্ডের মাহমুদপুর এলাকার আনোয়ারুল ইসলামে ছেলে আব্দুল মতিন (২৭), তোজাম্মেল হোসেন এর ছেলে আজিজুল ইসলাম (৩৩) একই এলাকার সুলতান মাহমুদ এর ছেলে মহসিন আলী (৩৮)। হঠাৎপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা (৩৫)। শহরের ইসলাম পাড়া এলাকায় তাপস কুমার এর ছেলে অমৃত রায় (২৫)। মাহমুদপুর এলাকার আব্দুল আজিজ এর ছেলে সোহেল রানা (৩০) এবং আবুল হোসেন এর ছেলে মনোয়ার হোসেন (৪২)এবং আব্দুল খালেক এর ছেলে আব্দুল আলিম (৪০)।

এছাড়াও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন, জালাল উদ্দিন এর ছেলে আব্দুর সাত্তার (৩৭) শহিদুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (২১), গোলাম মোস্তফার ছেলে জার্জেস শাহ (৩৮)আব্দুল খালেক এর ছেলে শাহিন (৩২)। তারা সকলে পৌর শহরের মামুদপুর এলাকার বাসিন্দা।

(এস/এসপি/মে ২৯, ২০২০)