নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : একসময় নদীটির ছিল ভরা যৌবন। পানির কল কল শব্দে প্রাণ জুড়াতো মানুষের। শিশুরা সাঁতার কেটে হতো এপার ওপার। এসব কেবলই স্মৃতির পাতায় ঠাঁয় নিয়েছে এলাকার মানুষের। ঈশ্বরগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীটির নাম কাঁচামাটিয়া।

উইকিপিডিয়া অনুযায়ী জানা যায়, স্থানীয় বিল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এখন নদীটি দেখে বোঝার উপায় নেই একসময় নদীটি ছিল প্রমত্তা। একসময়ের প্রমত্তা কাঁচামাটিয়া নদীটি আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। বছরে মাত্র দুয়েক মাস পানি থাকলেও সারা বছরই কোথাও কোথাও হাটু পানিরই দেখা মেলে না। এ নদীর পানি দিয়ে পাশের জমির চাষাবাদ হলেও বর্তমানে পানির অভাবে যান্ত্রিকভাবে সেচ প্রদান করে চাষাবাদ করতে হচ্ছে। পানি শুকিয়ে নদীর দুপাড়ের জায়গা গুলি এখন উর্বর জমিতে পরিণত হয়েছে। নদীর পাড়ের মানুষ সারা বছরই জাল দিয়ে মাছ সংগ্রহ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বিক্রি করতো বাজারে।

এ নদী দিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ, আঠারবাড়ী ও উচাখিলা এলাকার ব্যবসায়ীরা পণ্য নৌকায় পণ্য আনা নেওয়া করতো। এ অঞ্চলটি অধিক পরিমাণে পাট উৎপন্ন হতো। আর এসব পাট দেশের বিভিন্ন স্থানে এনদী দিয়ে নৌকায় করে পাঠানো হতো। নদীটির বিভিন্ন জায়গায় দখল করে বাঁধ নির্মাণ, দীর্ঘদিন খনন না করা, শহরের ময়লা আর্বজনা ফেলার কারণে আজ নদীটির এ বেহাল দশা বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

দত্তপাড়া নদী পাড়ের বাসিন্দা উবায়দুর রহমান (৮০) বলেন, আমরা নদীর ঢেউ দেখেছি । সারা বছরই নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করা যেত । এখন পানি না থাকায় এটাকে আর নদীই মনে হয় না। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার জানান, নদীটি এলাকার মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনের সাথে জড়িত। নদী পুনঃখনন করে পাড় তৈরি করা হলে মাছ চাষের পাশাপাশি মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থাও হবে।

নদী পুনঃখননের বিষয়ে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম জানান, ইত্যেমধ্যে এ প্রকল্পের জন্য ১’শ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে তবে এ উন্নয়ন খাতের কাজ বন্ধ থাকায় আপাতত খনন করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বরাদ্ধ সাপেক্ষে কাজ শুরু করা হবে।

(এন/এসপি/মে ৩১, ২০২০)