বিনোদন ডেস্ক : দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে সম্প্রতি না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। তার অকাল প্রয়াণে শোকে কাতর হয়ে আছে ভারতীয় সিনেমা জগত। দারুণ একজন অভিনেতার পাশাপাশি উঁচু মনের মানুষ হিসেবেও সমাদৃত ছিলেন ইরফান।

তার মৃত্যুর পর বেরিয়ে আসছে মানবিকতার অনেক গল্প। দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইরফান খানের স্বভাব ছিল। বহু দুস্থ মানুষের উপকার করেছেন তিনি। তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় একটি গোটা গ্রামের মানুষ গ্রামের নাম বদলে ফেলেছেন।

করোনা আক্রান্তদের পাশেও ছিলেন এ অভিনেতা। কিন্তু অন্য অনেক তারকার মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে তিনি সাহায্যের খবর প্রচার করেননি। করোনা আবহে চুপচাপ সাহায্য করে গিয়েছেন তিনি। অভিনেতার বন্ধু সম্প্রতি এই খবর প্রকাশ্যে এনেছেন।

অভিনেতার সেই বন্ধুর নাম জিয়াউল্লা। তিনি জানিয়েছেন, ইরফান প্রায়ই মানুষকে সাহায্য করতেন। কিন্তু সবসময় খেয়াল রাখতেন যাতে এ নিয়ে কোনো খবর কখনো মিডিয়ায় প্রকাশিত না হয়।

এমনকি করোনা আক্রান্তদেরও অনুদানও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেউ যেন এই ব্যাপারে মিডিয়াকে কথা না বলে সেজন্য না করেছিলেন তিনি।

জিয়াউল্লাহ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে সাহায্য করার কথা ভেবেছিলেন তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু। ইরফান যখন সেকথা জানতে পারেন, তিনিও এগিয়ে আসেন।

দরিদ্র মানুষদের সাহায্যার্থে তৈরি সেই তহবিলে ইরফান নিজে অর্থদান করেছিলেন। তার একটি মাত্র শর্ত ছিল। এই সাহায্যের কথা যেন কেউ জানতে না পারে। তিনি বিশ্বাস করতেন, বাম হাত কী দিয়েছে, তা ডান হাতের জানা উচিত নয়। তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল মানুষের শান্তি।

জিয়াউল্লাহ আরও বলেছেন, 'ছোটবেলায় যখন ও ঘুমোতো, তখন বিছানার পাশে ঘুড়ি নিয়ে ঘুমোত। যখনই আসত, গোটা এলাকা পজিটিভিটিতে ভরে যেত। ও ওর মায়ের খুব কাছের মানুষ ছিল। মায়ের অসুস্থতার কথা শুনলে ছুটে আসত। খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও ইরফান আসত। কিন্তু মায়ের সঙ্গে দেখা করা কোনোভাবেই মিস করত না।'

মায়ের মৃত্যুতে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন ইরফান খান। সেকথাও জানান জিয়াউল্লাহ। হয়তো সেই ধাক্কাই তাকে মন থেকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তাই আর ক্যানসারের সঙ্গে লড়তে পারেননি ইরফান।

(ওএস/এসপি/মে ৩১, ২০২০)