স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গৎবাঁধা লোক দেখানো কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে এসে অর্জিত মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নগরবাসীকে সেবা দিতে আন্তরিকভাবে কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এজন্য তৃণমূল থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত মশক নিয়ন্ত্রণের পুরো কার্যক্রম ঢেলে সাজানো হবে।

সোমবার (১ জুন) নগর ভবনের সেমিনার রুমে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এ কথা বলেন তিনি।

মশক নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তৈরিকৃত বিশদ কর্মপরিকল্পনা শুরুর কথা তুলে ধরে মেয়র তাপস বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়নে কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না। আমি ২৪ ঘণ্টার মেয়র। যে কোনো সময় যে কোনো কার্যক্রম পরিদর্শনে যাব। সে সময় স্পটে কাউকে পাওয়া না গেলে ধরে নেবেন তিনি আর ডিএসসিসিতে কর্মরত নেই। সেটা তিনি যে পর্যায়ের কর্মকর্তাই হন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কমিটি মাঠ পর্যায়ে প্রাপ্ত কার্যক্রমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পরামর্শ নেবেন। ৭ জুন থেকে শুরু হবে এ কার্যক্রম।

তাপস আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত মশক নিধনকর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিতরা তা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।

লার্ভিসাইডিং কাজটি সঠিকভাবে করা গেলে মশক নিয়ন্ত্রণের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়, যদিও এটা লোকচক্ষুর অগোচরে হয়ে থাকে তাই নাগরিকদের মধ্যে এর প্রভাব কম। তবে ফগিংয়ের সময় শব্দ শুনে নাগরিকরা বুঝতে পারেন যে সিটি করপোরেশন কাজ করছে।

তিনি জানান, ১৪ জুন থেকে দক্ষিণ সিটির জলাশয়, লেক, খাল শনাক্ত করে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো শুরু হবে। এক সঙ্গে নর্দমা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও চালানো হবে। ডিএসসিসি এলাকাধীন এসবের মালিক সিটি করপোরেশন। তাই নগরবাসীর কল্যাণে প্রয়োজন অনুযায়ী কার্যক্রম-পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন সংস্থা কি করবে বা করলো তা দেখা হবে না। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করবো। প্রয়োজনে ওইসব সংস্থা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

উপস্থাপিত এসব কর্মপরিকল্পনা জ্ঞান মেধা দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলে নগরবাসীর জন্য নতুন আঙ্গিকে নব যুগের সূচনা হবে- যা করপোরেশনের ইতিহাসে মাইলফলক সৃষ্টি করবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।

জানা গেছে, বিশদ কর্ম পরিকল্পনা মধ্যে রয়েছে, খোলা জলাশয় ব্যবস্থাপনার আওতায় করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের জলাশয়ের কচুরিপানা/ আবর্জনা পরিষ্কারকরণ। প্রতিবিঘা জলাশয়ে আনুমানিক ৩০০০-৩৫০০টি তেলাপিয়া এবং ২৫টি হাঁস চাষকরণ।

জলাশয়ে নিয়মিত জাল চালনা করা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাধ্যমে সকল নর্দমা পরিষ্কারকরণ। রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় প্রতিদিন প্রতি ওয়ার্ডে আটজন মশককর্মীর মাধ্যমে সকাল ৯টা হতে ১টা পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং এবং প্রতিদিন প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন মশক কর্মীর মাধ্যমে দুপুর আড়াইটা হতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফগিং কার্যক্রম চালানো।

সোর্স রিডাকশন কার্যক্রমের আওতায় অনলাইনে নগরবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতি ওয়ার্ডে তিনজন মশক কর্মীর মাধ্যমে নাগরিকদের বাসা-কর্মস্থল প্রাঙ্গণে এডিসের প্রজননস্থল ধংস কার্যক্রম ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কার্যক্রম ইত্যাদি।

সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ আহমেদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা এয়ার কমোডোর আবদুল বাতেন, সচিব মো. আকরামুজ্জামানসহ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা, এন্টোমলজিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/জুন ০১, ২০২০)