রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জলবায়ু ট্রাষ্টের  প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ ও পূর্ণবাসন প্রকল্পের আওতায় চার লাখ টাকার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া ৯০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে  সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউপি সদস্য ঠাকুরদাস সরকারের বিরুদ্ধে। টাকা ফেরৎ চেয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণশুনানীতে অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় লাঞ্ছিত হয়েছেন ওই ইউপি সদস্য।

কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের থালনা গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, প্রকৃতিক দুর্যোগ কবলিত সাতক্ষীরা জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ ও পূর্ণবাসন প্রকল্পের আওতায় প্রতি ঘর পিছু চার লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

২০১৪ সালে ওই ঘর দেওয়ার নাম করে তাদের গ্রামের ইউপি সদস্য ঠাকুরদাস সরকার তারসহ প্রশান্ত সরকার ও রণজিৎ সরকারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ৯০ হাজার টাকা নেন। দীর্ঘদিন কেটে যাওয়ায় ঘর না পেয়ে ইউপি সসদ্যের কাছে তারা টাকা ফেরৎ চান। টাকা ফেরৎ না পেয়ে গত বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গণশুনানীতে অভিযোগ (অভিযোগ নং- ২৬/২০১৯) করেন। তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় তার কার্যালয়ে শুনানীর জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ করেন।

বিষয়টি চেয়ারম্যান মোজাম্মেলল হক মোজাম জানতে পেরে তিনি তার পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেবেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময়ে চেয়ারম্যান কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় তাদের পক্ষে ভক্তি সরকারসহ তারা তিনজন গত বুধবার ইউপি সদস্য ঠাকুরদাসের বাড়ি যেয়ে টাকা ফেরৎ দেওয়ার কথা বলেন। এসময় ওই ঠাকুরদাসের সঙ্গে তাদের বচসা হয়। তিনি পারলে টাকা আদায় করে নিস বলে তাদেরকে হেঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

থালনা গ্রামের কিরণ সরকার ও বিশ্বনাথ সরকার বলেন, আমপান দুর্গত মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ অসহায় গরীব মানুষের মাঝে বিলি না করে ঠাকুরদাস তার দলীয় লোকজনদের মধ্যে বিলি করায় তারা প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষুব্ধ ঠাকুরদাস গৃহ নির্মাণে ঘুষ নেওয়া গ্রামবাসিদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় তাদের দুজনকেও জড়িয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেন। গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ নিয়ে পরিষদে শালিসি বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার করেন ঠাকুরদাস।

ইউপি সদস্য আবু বক্কর ও ইউপি সদস্য সাইলু বলেন, ঠাকুরদাস এর অভিযোগটি নিষ্পত্তি হলেও ঘর দেওয়ার নামে ঘুষ নেওয়া টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের পূণঃরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ঠাকুরদাস সরকার বলেন, যারা অভিযোগকারি তাদের মধ্যে একজনের ভাই ভক্তি সরকার জেলা পরিষদেও এক কর্মকর্তার কাছে ঘর নেওয়ার নামে ঘুষ দিয়েছিল। ঘর না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এটা স্থানীয় নোংরা পলিটিক্স।

(আরকে/এসপি/জুন ০৩, ২০২০)