রণেশ মৈত্র

অভিবাদন জর্জ ফ্লয়েড
ওরা তোমাকে খুন করেছে
প্রতিবাদে প্রকম্পিত রাজপথ
অন্তহীন ঘৃণায় অভিশপ্ত আমেরিকা
দেশজুড়ে জনতার ক্রোধ
আগুনের মত জ্বলছে যেন।

খুনের বহর দেখেছি আমরাও
দেখেছি পঞ্চাশের দশক
ষাটের দশক জুড়ে
বিশ্বকে পদানত করতে
তেল ও সম্পদ লুণ্ঠন করতে
এশিয়া-আফ্রিকার সদ্য স্বাধীন দেশগুলিকে
সামরিক নিগড়ে বেঁধে ফেলে
উদ্বাহু নৃত্য করতে
বর্বরতার সকল সীমা পেরিয়ে।

ষাটের দশকে দেখেছি
সুয়েজ খালের দখল নিতে
দেখেছি ইরাকে ইরানে, কিউবায়-সোভিয়েতে
বিধি নিষেধের বেড়াজালে আটকে রেখে
হত্যার উন্মত্ত নেশায় মেতে উঠতে।

সর্বত্র নিষ্ঠুর নির্য্যাতন
বিশ্বব্যাপী নরহত্যার ইন্ধন।
জনতার শত্রুর সাথে করমর্দন
নিত্য দুর্নিবার।

দাবী তাদের
গণতন্ত্র-মানবাধিকার
সবই বুলি মাত্র
শুধুই উচ্চারণ
অসার।

খুনের চেষ্টা ক্যাস্ত্রোকে কিউবায়
নির্মম হত্যা বাংলাদেশে, ইরাকে
ভারতে মিশরে-সমগ্র প্রথিবী জুড়ে
হাজার হাজার মাতৃক্রোড় শূণ্য করে
ওরা নানাদেশের পতাকার বদল ঘটিয়ে
ফেটে পড়ে পৈশাচিক উল্লাসে।

বর্ণ বৈষম্য, শোষণ আর মানুষে মানুষে হানাহানি
পুঁজিবাদের রক্ষা-কবচ জানি।
শোষণের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে
অস্ত্র হাতে-নিরস্ত্র মানব হত্যা
নিত্যদিন প্রতিদিন।
মানব জীবন ডাল-ভাত যেন

ইতিহাসের বর্বর এই নির্মমতা
দেখছি তো আজীবন
একাত্তরে বিশেষত:

অতীতে নেলসন ম্যান্ডোলা
আজ জর্জ ফ্লায়েড
পৃথিবী জুড়েই ফ্লয়েড ঢেউ
ক্ষুব্ধ মানুষ ফ্লয়েড হত্যায়
লাখো মানুষ কারফিউ ভেঙ্গে
উত্তাল মিছিলে ছোটে।
রাজপথ কাঁপে।

আদ্দিস-আবাবায়, লণ্ডনে
ভ্যাঙ্কুভার থেকে
প্যারিসে-বার্লিনে
লাতিন আমেরিকা থেকে মধ্য প্রাচ্যে।
কানাডা?
সেখানেও জনতার মুখরিত মিছিল

এ এক বিশাল স্রোত
দুনিয়া-কাঁপানো সমুদ্রের ঢেউ
সবার সমর্থন কালোর প্রতি
খুনীর বিরুদ্ধে।
করোনা?
শারীরিক বা সামাজিক দূরত্ব?
না, তুচ্ছ সেসব
পৃথিবী জুড়ে শুধুই মিছিল
ফ্লয়েড নেই
ফ্লয়েড অমর।

ঝড় আসছে ঝড়
হয়তো বদলাবে বিশ্বটাকে
কোটি জনতার সখ্যে
সোচ্চার জাগরণে।