বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাংঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে এখনও দিনে দুইবার ডুবছে বগী-গাবতলার তিন শতাধিক পরিবার। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পূর্ণিমার প্রভাবে গত দুদিন ধরে বলেশ্বর নদীর জোয়ারের পানি হু হু করে ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে গ্রাম। বসত ঘরের মধ্যে হাঁটু পানি। রান্না-বান্না বন্ধ। দুর্ভোগের আর শেষ নেই ওই পরিবারগুলোর। 

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর ২৭ মে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শরণখোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

এসময় তিনি বগী-গাবতলার দুই কিলোমিটার ভেঙে যাওয়া বাঁধ সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে দ্রুত মেরামতের আশ্বাস দেন। এর পর প্রায় ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও সেখানে রিংবেড়িবাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে বগী-গাবতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা বাঁধা দিয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। এসময় বগী সাতঘর এলাকার আবু সাইদ হাওলাদার, মাহাবুল হাওলাদার, ফুলমিয়া হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, গাবতলা এলাকার কামাল হাওলাদার, মোহাম্মদ খানসহ ভুত্তভোগীরা জানান, প্রতিদিন দুইবার জোয়ারের পানিতে তাদের ডুবতে হচ্ছে। ঘরবাড়িতে থাকার কোনো উপায় নেই। ঘরের মধ্যে পানি উঠে যায়। চুলায় পানি জমে থাকায় অনেকের বাড়িতে রান্না-বান্না হয়না। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রী এসে বাঁধের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। কিন্তু কাজের কোনো খবর নেই। এখন পানিতে ডুবে মরতে হচ্ছে আমাদের। এভাবে কোনো মানুষ বসা করতে পারে?

বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও দক্ষিণ সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন জানান, তাদের দুই ওয়ার্ডের নদীসংলগ্ন তিন শতাধিক পরিবার ভোগান্তিতে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে তাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। আম্ফানের পর এপর্যন্ত দুই-তিন দফা তলিয়েছে। ভাঙন থেকে জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকাটি মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বলেশ্বর পারের সহ¯্রাধিক মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তারা দ্রুত বাঁধের কাজ শুরুর দাবি জানান।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, বগী-গাবতলার ওই দুই কিলোমিটার এলাকা সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে রিংবেড়িবাঁধ দেয়ার কথা। ইতিমধ্যে তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রাথমিক জরিপ করেছেন। শিগগিরই কাজ শুরু হতে পারে।

(এসকেপি/এসপি/জুন ০৪, ২০২০)